জার্সি কথন

জার্সির প্রতি বাঙালির প্রেম সবসময় ছিল, আছে এবং থাকবে। ছোটবেলায় দেখেছি জার্সি কেনা এবং প্রিয় দলের জার্সি পড়ার জন্য বিকট উন্মাদনা। বিজ্ঞাপনের ভাষায় বলতে হয় সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এই উন্মাদনা এখন রীতিমত অবশ্য পালনীয় রীতিতে পরিণত হয়েছে। এখন খেলা দেখা মানেই প্রিয় দলের জার্সি আর সেদেশের পতাকার অঢেল সমাবেশ।

আশির দশকের শেষ দিকে রঙ্গিন টেলিভিশনের বদৌলতে আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত বিশ্বকাপ খেলা দেখাটাকে সিরিয়াসলি নিতে শুরু করে। সবিশেষ মনোযোগ ও পাগলামী নিয়ে বাঙালি তখন রাতের বেলা বিশ্বকাপ ফুটবলের খেলা দেখেছে। দল বেঁধে রাত জেগে খেলা দেখার জন্য কোমল পানীয় আর চিপস কিনে এনে মৌজ করে প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে তাদের। বর্তমানের প্রেক্ষাপট অবশ্য আরো বর্ণিল ও আড়ম্বরপূর্ণ। বাসার ছাদে, বন্ধুর বাসায় এমনকি হোটেলের হলরুম ভাড়া করে চলে এখন খেলা দেখা।

১৪ জুন রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবলের বিশাল আয়োজন। বিশ্বকাপের ২১তম আসরে আটটি গ্রুপে খেলবে ৩২টি দল। এই ৩২টি দলের মধ্যে আমরা নেই, মানে বাংলাদেশ নেই। যদিও ভক্ত সমর্থক রয়েছে কয়েকটি বিশেষ দলেরই। এদের মধ্যে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার সমর্থক সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি, সুতরাং গণিতের নিয়মে এই দুই দলের জার্সির চাহিদাও তাই সবচেয়ে বেশি। সময়ের সাথে সাথে অবশ্য অন্য দলগুলোর সমর্থকদেরও জার্সি কেনার আগ্রহ বেড়েছে। জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া, স্পেন, ইতালি (এবারের বিশ্বকাপে আজ্জুরিরা নেই), মেক্সিকো, পর্তুগাল, জাপানের সমর্থকদেরও এখন দেখা মেলে। ফুটবলের এই ভরা মৌসুমে সমর্থকমাত্রেই প্রিয় দলের জার্সি কেনার জন্য ছোটাছুটি শুরু হয়েছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের পছন্দের দলের জার্সি কিনে কাছের মানুষদের উপহারও দিচ্ছে।

শুধু জাতীয় দলই না, বিভিন্ন লিগের গুরুত্বপূর্ণ ক্লাবগুলোর জার্সির বিক্রিও চলে কিন্তু সারা বছর। রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, ম্যানচেস্টার সিটি, জুভেন্টাস, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি, আর্সেনাল, এসি মিলানসহ বেশ কয়েকটি ফুটবল ক্লাবের জার্সি কিনছে সব বয়সের মানুষ। যদিও তরুণদের মধ্যেই জার্সি নিয়ে আগ্রহ একটু বেশিই।

জার্সি নিয়ে চলবে আলাপ, গোটা বিশ্বকাপ জুড়েই কারণ জার্সিতে যে আমরা খুঁজে পাই বিশ্বকাপের সুবাস। যে সুবাস আমরা খুব শিগগির পাচ্ছি বলে মনে হয়না।