তরুণ নির্মাতাদের জন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব

বইয়ের রাজ্যে ডুবে থেকে কৈশোর কাটানোর সময় বুঝি শেষেরই পথে। নেটফ্লিক্স আর টরেন্টের যুগে সিনেমা, টিভি সিরিজ, কমিকই নতুন দিনের ট্রেন্ড। তাই যৌবনের শখেও এসেছে পরিবর্তন। স্বপ্নালু তরুণেরা এখন আর আগের মতো গিটারের দোকানে যায় না, বরং ক্যামেরা হাতে নিজের গল্প বলার চেষ্টা করে। তবে বরাবরের মতোই, নতুন আর আপাতদৃষ্টিতে অসফল এই তরুণদের নিজেদের কাজ দেখানোর সুযোগ সীমিত।

সেই চিন্তাকে কেন্দ্র করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ ‘টেইক ইওর ক্যামেরা, ফ্রেম ইওর ড্রিম’- স্লোগান নিয়ে নিয়মিত আয়োজন করে আসছে ‘আন্তর্জাতিক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব’। প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশ-বিদেশের নতুন নির্মাতাদের শর্টফিল্ম প্রদর্শন করে আসছে এই উৎসব। যেকোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স বা মাস্টার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এখানে তাদের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র জমা দিতে পারবেন। এছাড়া ব্যাচেলর ডিগ্রী শেষ হওয়ার পর আরও দুই বছর পর্যন্ত এই উৎসবে অংশগ্রহণ করবার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিযোগিতা (সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট) ও প্যানারোমা (সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট)- এই দুই ক্যাটাগরিতে শর্টফিল্ম জমা দিতে পারবেন অংশগ্রহণকারীরা। আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত চলচ্চিত্র জমা দেওয়ার সুযোগ থাকছে। উৎসবে চলচ্চিত্র জমা দেওয়া ও উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে চলচ্চিত্র সংসদের ওয়েবসাইটে।

এই উৎসব আক্ষরিক অর্থেই আন্তর্জাতিক। এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে নির্মাতারা তো অংশগ্রহণ করেনই, দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপের নব্য নির্মাতারাও এই উৎসবের নিয়মিত অংশগ্রহণকারী। তরুণ নির্মাতাদের বানানো সিনেমা প্রদর্শনীর পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ জাগিয়ে তুলতেই এই আয়োজন বলে জানালেন আয়োজকেরা।

উৎসবের এই দশম আয়োজনে প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো থেকে সেরা সিনেমা পাবে ‘জহির রায়হান শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরষ্কার’এবং শ্রেষ্ঠ বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পাবে ‘তারেক মাসুদ সেরা উদীয়মান পরিচালক পুরষ্কার’। দুটি পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে থাকবে ৩০০ ও ২০০ মার্কিন ডলারের প্রাইজমানি। এছাড়াও সেরা ৩০ জন পাবেন একটি ট্যালেন্ট ক্যম্পাস আয়োজনে অংশগ্রহনের সুযোগ, যেখানে দেশ ও দেশের বাইরের বিখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বরা থাকবেন আলোচক এবং প্রশিক্ষক হিসেবে। এর বাইরেও সেরা ৫০টি চলচ্চিত্র বাছাই করে সেগুলি প্রদর্শন করা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিদেশী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, টেলিভিশন চ্যানেল, সিনেপ্লেক্স এবং উন্মুক্ত প্রদর্শনীতে।