শিল্পী মনজুর রশীদের ২য় একক প্রদর্শনীর নাম ছিল ‘ন্যারেটিভ অফ টাইম’। শিল্পী মনজুর সংগ্রাম করেছেন ব্যক্তিজীবনে, সমাজের সাথে। লড়াই করেছেন, সময়ের সাথে, স্রোতের বিপরীতে। সেই লড়াই থেকেই উপলদ্ধি করেছেন বাস্তবতাকে। হয়ত সেকারণেই নিজের আত্মপ্রকাশী প্রদর্শনী করেছিলেন ‘নিজেকে খুঁজছি’ শিরোনামে। সেখানে নিজের কিংবা দেখা জীবনের গল্পগুলোই ছবি হয়ে উঠে তার ক্যানভাসে। যা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন প্রনম্য শিল্পী মনিরুল ইসলাম, রশিদ আমিন; মুগ্ধ হয়েছিলেন আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন।
আলোচ্য প্রদর্শনীতে Innocent শিরোনামের জলরং মাধ্যমে আঁকা ছবিটির বিষয় কন্যা শিশুর সারল্য। সরল মুখের হাসিতেই শিরোনামের এক সার্থক নিদর্শন দিয়েছেন শিল্পী। যদিও শিল্পী-দর্শক সকলেই জানেন পরিবর্তিত সময়ের প্রতিকূলতায় হাসিগুলো হারিয়ে যায়, ঠিক যেভাবে হারিয়ে যায় আমাদের শৈশব।
প্রদর্শনীতে আছে বিভিন্ন মাধ্যমে শিল্পীর শৈলীর সক্ষমতার অনন্য প্রদর্শন। পিভিসি বোর্ড দিয়ে নির্মাণ করেছেন চিত্রকলার ইতিহাসের বিখ্যাততম সুন্দরীকে, দ্য ভিঞ্চির মোনালিসাকে। ব্যাকগ্রাউন্ডের ফুমাটো দৃশ্যেরা উধাও। এসেছে ঐতিহ্যবাহী রিকশাচিত্রের মোটিফরা। ঝাচকচকে প্লাস্টিকে খচিত এই মোনালিসা যেন অনেকখানিই বাঙালি।
Story Teller শিরোনামের কাজটিতে জন্য শিল্পী নির্বাচন করেছেন এক শ্রমজীবীকে। যে শ্রমিকের জীবনের সবচেয়ে জরুরি বিষয়, সময়। বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতি মুহূর্তে শ্রমিক লড়ে- সময়ের সাথে, প্রতিকূলতার সাথে। শিল্পী মনজুর নিজের পেরিয়ে আসা একান্ত লড়াইয়ের সাথে সিমিলি খুঁজেছেন এই শ্রমিকের মুখে। যে শ্রমিকের মুখ প্রতিনিধিত্ব করে সময়ের গল্পকথকের।
বাস্তবতার নির্মম আখরে সময় ধারণ করে নব নব রূপ। সেই নির্মমতার সাথে লড়াইয়ের ময়দানে সুন্দর কিছুর প্রতিনিধিত্ব করে ক্যানভাসে শুধুমাত্র একটি ফুল, যে ফুলের নিষ্পাপ মায়া তৈরি করে শান্তির অনুভূতি। যেই অনুভূতিকে উপস্থাপন করতে শিল্পী মনজুর জল রঙয়ে নির্মাণ করেছেন ফুলের ছবি। যেই ফুলগুলি যেন ভালোবাসার গন্ধ ছড়িয়ে দিয়েছে লা গ্যালারিতে।
আঁলিয়স ফ্রঁসেজ দোর প্রাঙ্গণে লা গ্যালারি প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই প্রদর্শনীর শেষদিন আজ।