‘রামাদান’-এর বিজ্ঞাপন / বিজ্ঞাপন-এ-রামাদান

আজকাল হিজরি রমজান মাস শুরুর আগে ‘রামাদান কারিম’ লেখায় ভরে যায় হোমফিড। আমি অবশ্য রমজান বা উচ্চারণে রামজান মাসটাকে ‘রোজার মাস’ হিসেবেই জেনে এসেছি ছোটো থেকে। মাঝে ইসলাম শিক্ষা বইতে ‘সিয়াম’ সাধনার মাস হিসেবে পড়েছি। তো এখন প্রচলিত রামাদান। বেশ। রামাদান বা রামাদা’র উৎপত্তি রামিদা থেকে। যার অর্থ- অত্যন্ত গরম। হিজরি সনের নবম এই মাসটি একসময় সম্ভবত গরমকালের একটি মাস হিসেবেই ছিলো। তবে প্রতিবছর দশ দিনের মতো মাস এগিয়ে আসার কারণে এখন মাসটি যেকোনো ঋতুতেই পড়তে পারে। রামাদান-এর সাথে ‘কারিম’ বসিয়ে শুভেচ্ছা বাক্যটা একটু ভারিক্কি, একটু পশ্ শোনায়। একে অন্যকে খোশ আমদেদ মাহে রমজান বলার চে’ ‘রামাদান কারিম’ বলাটাই হয়তো বেশি শহুরে। নিজেকে জাতে ওঠানোর সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘রামাদান কারিম’ ভাইরাল হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে যেভাবেই ডাকা হোক, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ মাসটিতে একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানানোর এই ‘নেক্’ ইচ্ছেয় নিশ্চয়ই কারো মাঝে কোনো খাদ থাকে না।

ধান ভানতে গিয়ে প্রচুর ‘অন্যকিছু’র গীত গাওয়া হয়ে গেলো। বসেছিলাম রামাদান মানে রোজা রাখার মাসকে উপলক্ষ্য বা উপজীব্য করে তৈরি হওয়া বিজ্ঞাপন নিয়ে কথা বলতে। আর এ বছর এই ধরনের বিজ্ঞাপনের মধ্যে প্রথমেই দৃষ্টি কেড়েছে কোকাকোলা নেদারল্যান্ড-এর তৈরি বিজ্ঞাপনটি। ভিনধর্মপ্রধান এক দেশে এক মুসলিম তরুণীর এক রোজার দিনে ঘটে যাওয়া ঘটনা দেখানো হয়েছে এতে। যার শেষ ম্যাসেজটি হচ্ছে- ‘আমাদের যা এক করে তার মাহাত্ম্য আমাদের যা আলাদা করে তার চেয়ে অনেক গুণে বেশি’।

আর ওদিকে মিডল ইস্টের প্রভাবশালী টেলিকম কোম্পানি ‘জাইন’ বজায় রেখেছে ধারাবাহিকতা। প্রতিবছর রোজার আগে রমজান ও ইসলামের মূল স্পিরিটের বার্তা পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে বেশ যত্ন ও বাজেট নিয়ে দীর্ঘ বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে তারা।

গতবছরের তাদের বিজ্ঞাপনের তারা যেমন সন্ত্রাসবাদ রুখতে ভালোবাসার জয়গান গাইবার আহ্বান জানিয়েছিলো। তাতে উপস্থিত করেছিলো ইসলামের নামে হওয়া সন্ত্রাসবাদের শিকার নানা পরিচিত মুখকে। সে ধারাবাহিকতায় এবার ‘জাইন’-এর বিজ্ঞাপনটিও হয়েছে ব্যতিক্রম। যাতে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে। যাদের মধ্যে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভ্লাদিমির পুতিন, অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, কিম জং উন প্রমুখ। অবশ্যই সত্যিকার ‘তারা’ নন, তাদের ডামি। বিজ্ঞাপনে যুদ্ধবিধ্বস্ত মুসলিম দেশের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে এক শিশুকে দেখা যায় ওই শীর্ষ নেতাদের কাছে ইফতারের দাওয়াত নিয়ে যেতে।

রোজার মাহাত্ম্য নিয়ে বিজ্ঞাপন আরো হয়েছে। দেশে ও বিদেশে। এর মধ্যে পাকিস্তানের হলেও সার্ফ এক্সেল-এর ‘দাগ আচ্ছে হ্যায়’ থিমের সাথে মিলিয়ে এই বিজ্ঞাপনটাও ভালো।

আর দেশের কাজের মধ্যে ভাইরাল হওয়ার উপযোগী এলিমেন্ট রয়েছে রবি’র এই বিজ্ঞাপনটিতে।