গ্রামের এক ঝাঁক মেয়ে সাইকেলে চেপে স্কুলে যাচ্ছে, কিংবা সবার সঙ্গে প্লালা দিয়ে মেট্রোপলিসের পিচ ঢালা পথে সাই সাই গতিতে বাইক চালিয়ে নিয়মিত অফিস করছে-এমন দৃশ্য সচরারচর চোখে পড়ত না আগে। দিন বদলেছে, সময়ের সাথে অনেক কিছুতেই সমানতালে ও সদর্পে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশের মেয়ে শিশুরা । প্রতি বছরের রেজাল্টের দৌড়ে এগিয়ে থাকা মেয়েদের বিজয় উল্লাস বেশ পরিচিত দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা একদিন হয়ে উঠবে দেশের কাণ্ডারী।
আজ ১১ অক্টোবর কন্যাশিশু দিবস। বিশ্বের সাথে একযোগে বাংলাদেশও পালিত হচ্ছে কন্যাশিশু দিবস-এ বছরের প্রতিপাদ্য “Empower a girl, change the world”। ২০১২ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে এই দিবসটি হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও পরিবর্তন হচ্ছে মানসিকতার। বাবা-মায়েরা এখন অনেকেই ব্যস্ত তাদের মেয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে। শিখছে তারা কারাতে থেকে নাচসহ অনেক কিছুই। প্রাথমিক শিক্ষাটুকুও নিশ্চিত হয়েছে অনেক যায়গায়। তবে শহর থেকে বাইরে গেলে চিত্র কিছুটা ভিন্ন। খানিক পড়ালেখার গণ্ডি পেরোতে না পেরোতে হাঁড়ি ঠেলার কাজে নামিয়ে দেওয়া হয় অনেক পরিবারে। তবুও বেড়েছে প্রতিরোধ। অনেক ক্ষেত্রেই মেয়ে শিশুরা কারোর কোন পরোয়া না করেই নিজে নিজে আইনের আশ্রয় নিয়েছে, ঠেকিয়েছে বাল্য বিবাহ।
মেয়েদের বেলায় না-বাচক মানসিকতার সমাজে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে মানসিক স্থিরতা জরুরি। জরুরি দৃঢ মনোবল ও অদম্য সাহসের। এটি নিশ্চিত করার সর্বপ্রথম দ্বায়িত্ব মেয়েটির পরিবারের। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারই হয় শিশুটির বেড়ে ওঠার প্রথম প্রতিবন্ধকতা। তাই একটি সুন্দর পারিবারিক পরিবেশ নিশ্চিত করাটা হওয়া উচিত প্রথম পদক্ষেপ।
একইভাবে মুখ্য তাদের চিকিৎসার নিশ্চয়তা। মেয়ে শিশুদের সঠিক চিকিৎসা সেবা একান্তই জরুরি। যদি সমাজের অন্ধকার এভাবে আলোকিত করা যায় মেয়ে শিশুদের জন্য, তবেই তাদের সঠিক বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করা সম্ভব। যদিও প্রতিদিনের পত্রিকায় দেখা মেলে কিছু ভয়ংকর ও লোহমর্ষক ঘটনার। আমাদের আশে পাশেই লুকিয়ে থাকে কিছু মানুষ নামের পশু। যাদের থাবা থেকে আমাদের আদরের মেয়ে শিশুকে রক্ষা করাটা সকলের সম্মিলিত সামাজিক দ্বায়িত্ব।