নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে বাংলা সিনেমায় নেমে আসে নিকষ কালো এক অন্ধকার। সেসময়েই ভিলেন হিসেবে আত্মপ্রকাশ মনোয়ার হোসেন ডিপজলের। কাজী হায়াতের এক সিনেমায়, যার নাম ‘তেজী’। বাংলা সেলুলয়েডের ইতিহাসের অশ্লীল অস্থিরতম সময়ে আগমন ঘটে যেন সময়োচিত এক অভিনেতার। যাকে লুফে নেয় সিনেমার এক বিশেষ শ্রেণির দর্শক। সেই শুরু; এরপর একে একে অনেকগুলো সিনেমার জন্ম হয় শুধু ডিপজলকে পুঁজি করতেই। মধ্যবিত্ত যখন বোকাবাক্সে বন্দি তখন হলে সিটি দিয়ে, কোমর দুলিয়ে নাচা দর্শক টেনেছেন কেবল ডিপজল একা, নিজের নামের জোরে। নিজেদের সেরা সময় পেরিয়ে নায়কেরা যখন চরিত্রাভিনেতায় পরিণত হন তখন ডিপজল ভিলেন থেকে পজিটিভ চরিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন। রিকশাওয়ালা ডিপজলের প্রেমে কোটিপতির মেয়ের পাগল হওয়ার আজগুবি গল্পও তাই হা করে গিলেছে ভক্তরা, বড় পর্দায়! নিজের প্রযোজনা, রাজনীতির পাশাপাশি তার হাসপাতালে ভর্তি হওয়াও তাই বড় খবর।
কেমন ছিল ডিপজল অভিনীত সিনেমাগুলি। আমরা বাছলাম আলোচিত সিনেমাগুলির তিনটি নমুনা-
তেজী
১৯৯৯ সালের সিনেমা। মূল চরিত্রে ছিলেন মান্না। তবুও নজর কাড়েন ডিপজল। তার অভিনীত ‘বিষু’ চরিত্রটি ভীষণ জনপ্রিয়তা পায়। যার ধারাবাহিকতায় ডিপজল নিজেই প্রযোজণা করেন ‘ক্ষ্যাপা বিষু’ এবং ‘ভয়ংকর বিষু’ নামের দুটি সিনেমা। উল্লেখ্য, সেসময় থেকেই সিনেমার নায়ক-নায়িকার চরিত্রের সাথে তাল মিলিয়ে তার উপস্থিতি দর্শকের কাছে সমান গুরুত্ব পেতে শুরু করে।
আম্মাজান
রকস্টার আইয়ুব বাচ্চুর ‘আম্মাজান আম্মাজান’ গানটি আজও অমলিন। মূল চরিত্রটিই খল, যার চরিত্রায়ণে মান্না, সাথে আরো একজন খলনায়ক- ডিপজল। ‘বাদশা-কালাম’ এই দুই চরিত্রে বেশ জমিয়ে অভিনয় করেছিলেন নায়ক মান্না ও ডিপজল। সিনেমাটির ইউটিউব ভিউ এখনও ঈর্ষা জাগানোর মতোই।
চাচ্চু
অপু বিশ্বাস-শাকিব খান জুটির সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চরিত্রে বড় পর্দায় হাজির হয়েছিলেন ডিপজল। শিশু শিল্পী দিঘীও তুমুল দর্শক জনপ্রিয়তা পায় এই সিনেমাতেই। নিজের ক্যারিয়ারে বড় একটা পরিবর্তন এনে টানা ভিন্নধর্মী চরিত্রে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন তিনি।
বিভিন্ন কারণে আলোচিত-সমালোচিত ডিপজলের সর্বশেষ অভিনয় করবার কথা ছিল তার মেয়ে অলিজা পরিচালিত ‘মেঘলা’ চলচ্চিত্রে।