‘কান লায়নস’। ডাজ ইট রিং এনি বেলস? পরিচিত লাগছে কি? মনে না পড়লে একটু সাহায্য করি। গেলো বছর বিজ্ঞাপনী সংস্থা গ্রে ঢাকা ‘বিনে পয়সার এসি’র জন্য একটা আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিলো মনে পড়ে? সেটাই ছিলো কান লায়নস-এর আয়োজন। বিশ্ব বিজ্ঞাপনের সবচে’ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। সেবার গ্রে ঢাকা প্রোডাক্ট ইনোভেশন বিভাগে গোল্ড লায়ন জিতেছিলো। ফ্রান্সের কান শহরে ক’দিন আগেই হয়ে গেলো ২০১৭’র কান লায়নস। গত বছর বিশ্ব মিডিয়া দাপিয়ে বেড়ানো ক্যাম্পেইনগুলোর ঝুলিতে উঠেছে বিভিন্ন ক্যাটেগরির পুরস্কার। তার মধ্যে সবসেরা ও সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ‘কান লায়নস টাইটেনিয়াম’ জিতেছে চারটি মেজর ক্যাম্পেইন। আলাদা ক্যাম্পেইন হলেও প্রতিটিতেই খুঁজে পাওয়া যায় অদম্য ও ইতিবাচক মনোভাব, অফুরান প্রাণশক্তি, নতুন পরিচয় আর নিজস্ব মতপ্রকাশের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। চলুন দেখি এক এক করে।
স্টেট স্ট্রিট গ্লোবাল অ্যাডভাইজর: ফিয়ারলেস গার্ল
এজেন্সি: ম্যাকান নিউইয়র্ক
ওয়াল স্ট্রিটের বিখ্যাত তেজী ষাঁড়ের ভাস্কর্যের সামনে নিউইয়র্কের এজেন্সি ম্যাকান বসিয়ে দিলো নির্ভীক মেয়েমূর্তিটিকে। আর মুহূর্তেই ওটা হয়ে গেলো ইন্টারনেট সেনসেশন। সেলফি, নিউজ, ব্লগিং, টুইটিং, শেয়ার মিলিয়ে একাকার অবস্থা। তাতেই এবারের কান লায়নস-এ ‘ফিয়ারলেস গার্ল’-এর জয়জয়কার। চারটা গ্রাঁ প্রিঁ সহ মোট আঠারোটা লায়ন জিতেছে এই ক্যাম্পেইনটি। কান-এর ইতিহাসে ফিয়ারলেস গার্ল মাত্র দ্বিতীয় ক্যাম্পেইন যেটি চারটি গ্রাঁ প্রিঁ জিতেছে।
কেনজো: মাই মিউট্যান্ট ব্রেইন
এজেন্সি: ফ্রেমওয়ার্ক
পারফিউমের বিজ্ঞাপন বলতে যে অভিজাত ও সেন্সুয়াল বিজ্ঞাপন দেখে অভ্যস্ত সেই স্টেরিওটাইপ ভেঙে দিয়েছে কেনজো’র নতুন সুগন্ধির জন্য নির্মিত এই উদ্ভট কমার্শিয়াল মুভি। এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের মাঝপথে হতাশ হয়ে বেরিয়ে গিয়ে নিজের ‘মিউট্যান্ট ব্রেইন’-এর তালে অকস্মাৎ আক্রান্ত হওয়া মার্গারেট কোয়েলি’র পারফরমেন্স ছিলো একেবারেই যাকে বলে ‘তারছেঁড়া’!
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল: রিফিউজি নেশন
এজেন্সি: অগিলভি নিউ ইয়র্ক
দশজন উদ্বাস্তু পৌঁছে তো গেলেন অলিম্পিকে অংশ নিতে, কিন্তু অলিম্পিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে ওদের যে একটা দেশের পরিচয় লাগবে। একটা পতাকার ছায়াতল লাগবে। ওদের কাছে ওসবের কিছুই নেই। তাহলে কি গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ-এর এতো কাছ থেকে ফিরে যেতে হবে ওদের? না। ফিরে যেতে হয়নি। ওই সময় এগিয়ে এসেছিলো অ্যামনেস্টি। পাশে ছিলো অগিলভি নিউ ইয়র্ক। রিফিউজিরা পেলো রিফিউজি নেশন নামের নতুন দেশ। আর বিশ্বব্যাপী তাদের পরিচয়ের প্রতীক লাইফ-জ্যাকেটের আদলে তৈরি হলো রিফিউজি নেশনের নতুন পতাকা। রচিত হলো একটি অ্যান্থেম-ও।
বুস্ট মোবাইল: বুস্ট ইয়োর ভয়েস
এজেন্সি: ওয়ানএইটি এলএ
আমেরিকার ছোট শহরগুলোতে সাধারণ নির্বাচনের দিনগুলোয় ভোটারদের অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়। ভোটারের তুলনায় বুথের সংখ্যা অনেক কম থাকায় ২০১২ সালে দেখা গিয়েছিলো অনেক অনেক ভোটার মতপ্রকাশের সুযোগই পায়নি। গণতান্ত্রিক অধিকারের এ দৈন্য দশা দূর করতে বুস্ট মোবাইল নেয় এক অভিনব উদ্যোগ। সারাদেশে তাদের আউটলেট নেহায়েত কম নয়। ভোটের দিন তাদের আউটলেটগুলোই হয়ে যায় অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। ফলাফল? বিভিন্ন স্টেটে আগেরবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভোট কাউন্ট।