নদীর পাড় দিয়ে সারি গাইলে নদীর কিছু যায় আসে? একদমই না।
তেমনই আরেক নদী দীপিকা পড়ুকোন। ভারতের বাজার জয় করে এখন তিনি ইন্টারন্যাশনাল স্টার। ওম শান্তি ওমের শান্তির যৌবন ফি বছর যেন বেড়েই চলেছে। সাথে তাই বাড়ছে লাইক-সাবস্ক্রাইব ও হেটারদের সংখ্যাও। বক্সঅফিসের ব্যাক টু ব্যাক সাফল্য দিয়ে জারি সারি গায়ক হেটারদের তাই ভাসিয়ে দিচ্ছেন নিজের মোহিনী খরস্রোতে।
বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ম্যাগাজিন ম্যাক্সিম এ মাসে কভার করেছে দীপিকাকে, ফ্রন্টেও তারই ছবি। সামাজিক দুনিয়া তাতেই মশগুল। কারণ এমা ওয়াটসন, এমা স্টোন, ডাকোটা জনসন, কেন্ডেল জেনারের মতো পশ্চিমা সুন্দরীদের পাশাপাশি দীপিকাও জায়গা করে নিয়েছেন ম্যাক্সিমের হট হান্ড্রেড তালিকায়। একশ’র বদলে যদি তালিকা ছোট করে ডজনেও আনা হয় সেখানেও দীপিকার থাকারই কথা বিশেষত ভিন ডিজেলের সাথে এক্স এক্স এক্সঃ রিটার্ন অফ জ্যান্ডার কেজের সাফল্যের পর। কিন্তু সমস্যাতো সেখানে নয়।
উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে ম্যাক্সিমের কভার ফটোশুটের একটা ছবি ইনস্টাগ্রামে আপলোড করার পরে। ঝাঁকে ঝাঁকে ফ্যান ফলোয়াররা তেড়ে আসেন নীতি পুলিশের ঝাণ্ডা বাঁগিয়ে। খিস্তি আর কটু বাক্যবাণে ভর্তি হতে থাকে ইনস্টাগ্রামের কমেন্ট বাক্স। যা নয় তাই বলে চলে গালাগাল। অথচ প্রায় নির্দোষ ধবধবে সাদা ক্রপ টপ আর লো কাট হাই ওয়েস্ট হিপস্টার। নীতিবাগীশদের দাবি- খুব বেশি গা দেখিয়েছেন দীপিকা।
আশ্চর্য! মুন্নি বদনামের দেশে সম্ভবত এরচে বেশি শরীর কেউ বোধকরি দেখেনি!
যদিও সেসব জ্ঞানবাক্যকে থোড়াই কেয়ার করেছেন দীপিকা। ২৪ ঘণ্টার না পেরোতেই ওই একই ফটোশুটের আরেকটি ছবি আপলোড করে দিয়েছেন ইনস্টাগ্রামে। বুঝিয়েছেন, হেটারকুল যাই বলুক না কেন তাতে তার কানাকড়িই এসে যায়।
হঠাৎ কী যেন হয়েছে! যাকে তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে যে কেউ। যা নয় তাই বলে করা হচ্ছে ‘জাজ’। দঙ্গল সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করা ফাতিমা সানা শেখও সম্প্রতি শিকার হয়েছেন নীতিবাগীশদের। মাল্টায় সিনেমার শুটিং বিরতিতে বিকিনি পরা সাদাকালো এক ছবি আপলোড করেছিলেন ইনস্ট্রাগ্রামে। সঙ্গে সঙ্গে ধেয়ে আসতে থাকে তীর্যক মন্তব্য, গালিগালাজ। ফাতিমাও একইরকম কুল কায়দায় ট্যাকল করেছেন কটুমন্তব্যের ঝড়। প্রথমে সাদাকালো ছবি দিয়ে গাল খেয়েছেন বলে পরে রঙ্গিন ছবি আপলোড করে ঝামা ঘষে দিয়েছেন হেটারদের মুখে। পেয়েছেন দ্বিগুণ লাইকও।
দুটো ঘটনারই একই চিত্র। সমাধানের প্রকল্পও একই। কবিগুরু বলেছেন, “যখনই দাঁড়াবে তুমি সম্মুখে তাহার, তখনই সে/ পথকুক্কুরের মতো সংকোচে সত্রাসে যাবে মিশে”। বিশ্বজুড়ে নিগৃহীত, নির্যাতিত নারীদের প্রতি সেই বার্তা পৌছে দিলেন সময়ে সেরা দুই হার্টথ্রব- যদি তুমি মনে করো তুমি ঠিক কাজটি করছো তাহলে সেটাই করতে থাকো। এগিয়ে যাও নিন্দুকের মুখে ছাই ফেলে।
আমাদের সাকিব আল হাসান তো তাই করছেন। তাই না?