মহাকাশে পৌঁছে গেছে আমাদের স্যাটেলাইট। আমরা গর্ব করতেই পারি। বিশ্বে নাকি মাত্র ৫৭টা দেশেরই আছে এই স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। অনেক উপকারে আসবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আরো অনেক জিনিস আমাদের আছে যেগুলো মহাকাশে পাঠিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ পৃথিবীর আরো অনেক উপকার করতে পারি। সেগুলো কী হতে পারে এবং তা ভবিষ্যতে মহাকাশে কী কাজে ব্যবহৃত হবে তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে এই নিরীক্ষাধর্মী প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
ফুটওভার ব্রিজ:
ঢাকা শহরে এমন অনেক ফুটওভার ব্রিজ রয়েছে যেগুলো আদতে নগরীর শোভাবর্ধন ব্যতীত আর কোনো কাজেই আসে না। এই ব্রিজগুলোকে আমরা পত্রপাঠ বিদায় করে মহাকাশে পাঠিয়ে দিতে পারি। আন্তঃগ্যালাক্সিয় যোগাযোগ স্থাপনে এই ব্রিজগুলো কাজে আসবে বলে গবেষণায় জানা গেছে। এছাড়া এই ব্রিজগুলোয় কালেভদ্রে ওঠা পথচারীদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে সাদর অভ্যর্থনার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত থাকেন তাদেরকেও পাঠিয়ে দিয়ে ‘গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি ব্রিজ’-এর চাকরি দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি।
ট্রাফিক সিগনাল বাতি:
লাল-সবুজ বাতিগুলো শুধু এমনিই জ্বলে নেভে। কয়দিন দেখেছেন সেগুলো ঠিকমতো ফলো করে যানবাহন চলাচল করতে? গাড়ি চলে ট্রাফিক সার্জেন্টের নির্দেশে। তাহলে ট্রাফিক সিগনাল বাতির কাজ কী? তার’চে পাঠিয়ে দেয়া হোক মহাবিশ্বে। স্যাটেলাইটগুলো ঘুরতে ঘুরতে যাতে অন্যটার কক্ষপথে চলে গিয়ে বাড়ি না খায় তার জন্য সিগনাল দেবার কাজে আসবে। এতে করে এখানকার বিদ্যুৎও বাঁচবে।
ইমারজেন্সি এক্সিট:
ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য দুর্যোগে জরুরি নির্গমনের জন্য অধিকাংশ অফিসেই নামকাওয়াস্তে ইমারজেন্সি এক্সিট ডোর থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই নির্গমন পথগুলো ভয়ংকর সংকীর্ণ এবং বিভিন্ন জিনিসপত্র ও ধূলাবালিতে ঠাসা থাকে বিধায় জরুরি মুহূর্তে সেগুলোয় ঢোকা মানে আরো বেশি বিপদে পড়া। তাই এই এক্সিট ডোরগুলোকে মহাকাশ পাঠিয়ে দেয়া হোক। ইন্টারগ্যালাকটিক ভ্রমণগুলোতে পথিমধ্যে আকস্মিকভাবে ব্ল্যাক হোল উদয় হলে এই এক্সিট ডোরগুলো অন্য কোনো ডাইমেনশনে চলে যেতে সহায়তা করবে।
ডাস্টবিন:
ব্যবহার করার অনুরোধের কথা গায়ে লিখে রাখার পরও নগরবাসীর বয়েই গেছে শুনতে। তো এই অব্যবহৃত ডাস্টবিনগুলো মহাবৈশ্বিক বর্জ্য সংরক্ষণে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আপনারা জেনে খুশি হবেন ইতিমধ্যেই কিছু ডাস্টবিন মহাবিশ্বে পাঠিয়ে দিতে আমরা সমর্থ হয়েছি। এই যে দেখুন বামপাশের ছবির বালতিগুলো নেই। অলরেডি গন।
জানমালের নিরাপত্তা:
এই ব্রিজ ভেঙে পড়ে তো ফ্লাইওভারে ফাটল দেখা দেয়, ওদিকে ওলিতে-গলিতে ছিনতাই-চুরি-রাহাজানিতে অর্থকড়ি কিংবা জীবন, কোনোটারই নিরাপত্তা নেই। তো এই নিরাপত্তার গ্যারান্টি যা কাগজে-কলমেই আছে (আসলেও আছে কি?) সেগুলোকে বাক্সবন্দি করে মহাকাশে পাঠিয়ে দেওয়া দরকার। বাক্সের গায়ে বড় করে লেখা থাকবে- ভঙ্গুর পদার্থ, হ্যান্ডেল উইথ কেয়ার।
ঢাকার ফুটপাথ:
ঢাকায় কি আসলে ফুটপাথের দরকার আছে? নেই। এখানে ফুটপাথের হয় দরকার নেই অথবা কেউ ব্যবহার করার সুযোগ পায় না। তাই এই ফুটপাথগুলোকেও সসম্মানে মহাকাশে পাঠিয়ে ঢাকা শহরকে সুন্দর করা যেতে পারে।
কিছু মানুষের ঘিলু:
এ বস্তুরও দরকার নেই আসলে। নইলে মগজ থাকার পরও অনেকে ফুটওভার ব্রিজ রেখে নিচ দিয়ে রাস্তা পার হন, হেলমেট ছাড়া বাইক চালান কিংবা রাস্তার রং সাইড দিয়ে গাড়ি ছোটান। তাদের অব্যবহৃত ঘিলু সংগ্রহ করে অন্তরীক্ষে পাঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কোনো গ্রহে বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে সেখানে চাষাবাদের জন্য ঘিলুসমূহ হতে পারে উৎকৃষ্ট সার।
৩০০ টাকার এনার্জি লাইটের বাকি ২০০ টাকা:
রাস্তায় নানা মোড়ে আওয়াজ দিয়ে যে ৩০০ টাকার এনার্জি লাইট বিক্রি হয়, জীবনে শুনেছেন সেগুলো ১০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করতে? হয় না। তো বাকি দু’শো টাকা তো অব্যবহৃতই থেকে গেল, তাই না? সেই টাকাগুলো আমরা মহাকাশে পাঠিয়ে দিতে পারি। তা দিয়েই হয়তো ভবিষ্যতের জন্য প্রথম মহাকাশ ব্যাংক তৈরি হবে। হানিমুনে চাঁদে গিয়ে টাকা ফুরিয়ে গেলে সে ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তুলে খরচও করা যাবে। বলা যায় না, কোম্পানির প্রচারের জন্য সেই ব্যাংকেও হয়তো থাকবে নানা অফার ও ডিসকাউন্ট!