ক্রিশ্চিয়ান চার্লস ফিলিপ বেল। মাঝের ‘চার্লস ফিলিপ’ অংশটুকু এখন আর বেশিরভাগ মানুষেরই মনে নেই। পুরো দুনিয়া এখন তাকে ক্রিশ্চিয়ান বেল নামেই চেনে। অনেকের কাছে তিনি আবার শুধুই ‘ব্যাটম্যান’। ১৯৭৪ সালে ওয়েলসে জন্ম তার। মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্পিলবার্গের ‘Empire of the Sun’ দিয়ে হলিউডে যাত্রা শুরু করেছিলেন। সিনেমার চরিত্রের জন্য অদ্ভুত শারীরিক পরিবর্তন আর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য নতুন দিনের সিনেমাপ্রেমিদের কাছে তিনি সুপরিচিত। ক্রিশ্চিয়ান বেলের জন্মদিন আজ। তার সেরা ৫টি চরিত্র নিয়ে আজকের লেখা।
প্যাট্রিক বেইটমেন (American Psycho)
২০০০ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমা দিয়েই বেল সবার নজরে এসেছিলেন প্রথমবারের মতো। এই সিনেমায় তাকে নিউ ইয়র্কের একজন সফল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং এক্সিকিউটিভ চরিত্রে দেখা যায়। কিন্তু এই চরিত্রের আড়ালে তিনি আবার একজন সিরিয়াল কিলারও। ব্রেট ইস্টন এলিসের একই নামের উপন্যাস থেকে এই সিনেমাটি তৈরি হয়। ক্রিশ্চিয়ান বেল এই সিনেমার প্রস্তুতির জন্য নিজেকে আস্তে আস্তে তৈরি করেছিলেন। উপন্যাসের বর্ণনা মোতাবেক পরিবর্তন করেছিলেন শরীরী কাঠামো। পড়াশুনা করেছিলেন সিরিয়াল কিলারদের নিয়েও।
ট্রেভর রেজনিক (The Machinist)
২০০৪ সালে ব্র্যাড এন্ডারসনের এই সাইকোলজিকাল থ্রিলারে অভিনয় করেন বেল। ১ বছর ধরে ঘুমাতে না পারা এক কারখানা শ্রমিকের চরিত্রের অভিনয় করেন তিনি এই সিনেমায়। এই চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার জন্য বেল এক অসাধ্য সাধন করে বসেন। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি ২৮ কেজি ওজন কমান। শুধু তাই নয়, এই সিনেমার প্রস্তুতির জন্য তিনি দিনের পর দিন শুধু কফি আর আপেল খেয়ে কাটিয়েছেন। ঘুমও কমিয়ে দিয়েছিলেন ইচ্ছে করে; শুধুমাত্র ট্রেভর রেজনিক চরিত্রটির মানসিক অবস্থা পর্দায় ফুটিয়ে তোলার জন্য।
ব্রুস ওয়েইন (The Batman Trilogy)
নোলানের এই অসাধারণ ট্রিলজি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে ২০০৮ সালে এই ট্রিলজির ২য় কিস্তি ‘The Dark Knight’-এ বেলের ভূমিকা নিয়ে কিছু কথা বলাই যায়। ‘The Machinist’ এর পরের বছরেই মুক্তি পায় ডার্ক নাইট। অর্থাৎ, ট্রেভর রেজনিক থেকে নিজেকে আবার পেশীবহুল ব্যাটম্যানে পরিণত হওয়ার জন্য তার হাতে সময় ছিলো খুবই কম। পরিচালকও তাকে ৬ মাস সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। ক্রিশ্চিয়ান বেল এবার আরো বড় পরীক্ষায় পাশ করলেন। ৬ মাসের মধ্যে ৪৫ কেজি ওজন বাড়ালেন। ফলাফল তো সিনেমায় দর্শকরা দেখেছেনই।
ডিকি একলান্ড (The Fighter)
২০১০ সালে মুক্তি পায় ডেভিড ও’রাসেলের এই বায়োগ্রাফি-ড্রামা ধাঁচের সিনেমাটি। মার্ক ওয়ালবার্গের সাথে এই সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে ছিলেন ক্রিশ্চিয়ান বেল। এই সিনেমার জন্যও রাতারাতি ১৪ কেজি ওজন কমান তিনি। অবসর নেয়া এক বক্সারের চরিত্রে অভিনয় করে ক্যারিয়ার প্রথম অস্কারটি জিতে নেন বেল।
আরভিং রোজেনফিল্ড (American Hustle)
২০১৩ সালে আবারো ডেভিড ও’রাসেলের সাথে কাজ করেন বেল। ক্রাইম-ড্রামা জনরার এই সিনেমাটিতে তাকে দেখা যায় এক কন-আর্টিস্ট চরিত্রে। এই চরিত্রের জন্য তিনি ২০ কেজি ওজন বাড়িয়েছিলেন, মাথার চুল ফেলে দিয়ে হয়েছিলেন টেকো। এই সিনেমার সেটে রবার্ট ডি নিরো একটি ক্যামিও চরিত্র করতে এসে প্রথম দেখায় চিনতেই পারেননি ক্রিশ্চিয়ান বেলকে এতটাই বদলে গিয়েছিলেন তিনি।