এসে গেছেন ড্যানিয়েল ডে-লুইস!

৬ বছর পর আবারো ফিরে এলেন স্যার ড্যানিয়েল ডে-লুইস। ভক্তকূল এবং পুরো সিনেমাজগতকে আরও একবার নাড়িয়ে দিতে। নাড়িয়ে দেবেন না-ই বা কেন? ইতিহাসের একমাত্র অভিনেতা হিসেবে তিনটি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার অস্কার জয় করা এই ৬০ বছর বয়সী যে ঘোষণা দিয়েছেন ‘ফ্যান্টম থ্রেড’ই হতে চলেছে তাঁর অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র। আর বছরের শেষভাগে মুক্তি পাওয়া এই চলচ্চিত্রের জন্য আরও একবার পেয়ে গেলেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতার অস্কার মনোনয়ন।

ডে-লুইসের অস্কার মনোনয়ন পাওয়াটা একটা বড় খবর এজন্য যে, এর আগে মাত্র ৫ বার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার  মনোনয়ন পেয়েই তিনি জিতে নিয়েছেন ৩ টি পুরস্কার। কাজেই, ডে-লুইস যখন মনোনয়ন পান, তখন সবার ধারনা হয়েই যায় এবারো হয়তো অস্কারটা তার ঝুলিতেই যাচ্ছে। এই ধারণা পোক্ত করেছেন তিনি নিজেই। অতিরিক্ত পারফেকশনিস্ট এই মানুষটির অভিনয়ের প্রতি নিবেদনও কিংবদন্তীতুল্য। কি করেননি তিনি? পা দিয়ে ছবি আঁকা শিখেছেন, কয়েক মাস হুইল চেয়ারে বসে থেকেছেন, কসাইয়ের কাজ শিখেছেন, আরও কত কি! অভিনয়ের প্রধানত দুটি ধারা রয়েছে। একটি ক্ল্যাসিকাল অ্যাক্টিং, অপরটি মেথড অ্যাক্টিং। জীবিত অভিনেতাদের মধ্যে ড্যানিয়েল ডে-লুইসকে ধরা হয় মেথড অ্যাক্টিংয়ের পুরোধা হিসেবে। চরিত্রের জন্যে নিজেকে বেমালুম বদলে ফেলার এবং চরিত্রের মধ্যে বসবাস করার তার যে ইতিহাস তাতো সিনেমাপ্রেমীদের অজানা নয়।

পরিচালক পল থমাস অ্যান্ডারসনের সাথে এটি ড্যানিয়েলের দ্বিতীয় যুগলবন্দি। এর আগে প্রচুর প্রশংসিত হয় ২০০৭ সালে এই জুটির ‘দেয়ার উইল বি ব্লাড’ সিনেমাটি। যে সিনেমায় ড্যানিয়েল জিতে নেন নিজের দ্বিতীয় অস্কার। কাজেই আবারো তাদের একসাথে হওয়াটাও হইচই ফেলেছে। তবে ড্যানিয়েলের এত এত প্রশংসার ভিড়ে কিছু সমালোচনাও যে নেই তা কিন্তু নয়! নিন্দুকেরা বলে বেড়ান, ড্যানিয়েল সিনেমা করেন শুধু অস্কার জেতার জন্যেই। তার অভিনীত বেশিরভাগ সিনেমাই যে জীবনীনির্ভর অথবা ঐতিহাসিক পটভূমির উপর নির্মিত। তার অস্কার জেতা তিনটি সিনেমার (মাই লেফট ফুট, দেয়ার উইল বি ব্লাড, লিংকন) সবগুলোই বায়োপিক ঘরানার। এমনকি মনোনয়ন পাওয়া বাকি দুটি সিনেমাও (গ্যাংস অফ নিউইয়র্ক, ইন দি নেম অফ দি ফাদার) একই ক্যাটাগরিতে পড়ে! এবারো তার ফ্যান্টম থ্রেড ১৯৫০ এর দশকের লন্ডন শহরের একজন ফ্যাশন ডিজাইনারের জীবন ও প্রেমকে ঘিরে চিত্রায়িত। কাজেই, তার অভিনয়ের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও, আড়ালে সবসময়ই কথা উঠেছে ড্যানিয়েল সিনেমা করেনই স্রেফ পুরস্কারের জন্য। নিজের চেনা উঠোনের বাইরে তাকে প্রায় দেখাই যায় না। কিন্তু, সে যাই হোক, নামটা যখন ড্যানিয়েল ডে-লুইস, তখন আশা করাই যায় অন্তত অভিনয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চটাই দর্শকরা পেতে যাচ্ছে। কে জানে, এবারে হয়তো নিজের শেষ সিনেমা দিয়েই এক হালি অস্কারও বাগিয়ে নেবেন!