জেমস ইউজিন ক্যারি। অপরিচিত লাগছে নামটি? লাগারই কথা। এই নামে তাকে এখন আর খুব বেশি মানুষ চেনে না। জিম ক্যারি নামেই এখন পরিচিত তিনি। ১৯৬২ সালে আজকের দিনে কানাডার অন্টারিওতে এই তারকার জন্ম। হলিউডে তার প্রথম বড় কাজ ১৯৯৪ সালে। Ace Ventura: Pet Detective নামের এই সিনেমাটিতে তার প্রানবন্ত অভিনয় মন কেড়ে নিয়েছিলো পুরো হলিউডের। একই বছর Dumb and Dumber নামের আরো একটি সিনেমা মুক্তি পায় তার। পুরো বিশ্বজুড়ে ২৭০ মিলিয়ন ডলার আয় করে সিনেমাটি। সেই বছরই The Mask এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড নোমিনেশনও পান তিনি।
ক্যারিয়ারে আর কখনো ফিরে তাকাতে হয়নি তার। অসাধারণ অভিব্যক্তি ও যেকোন চরিত্রের সাথে অদ্ভুতভাবে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতার ব্যবহার করে পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই বিচিত্র সব চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন জিম ক্যারি। শুধু মুখের কথা নয়, শরীরী ভাষা ও চোখের চাহনিও যে পর্দায় হাস্যরস তৈরি করতে কি পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে তার প্রমাণ জিম ক্যারি। তার সেরা ৫টি সিনেমা নিয়েই আজকের লেখা।
Eternal Sunshine of the Spotless Mind
২০০৪ সালে মুক্তি পায় ড্রামা-রোমান্স-সাইফাই জনরার এই সিনেমাটি। মিচেল গন্ড্রির পরিচালনায় এই সিনেমাটির মূল চরিত্রে ছিলেন জিম ক্যারি ও কেট উইন্সলেট। অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে ক্যাটাগরিতে সেবছর অস্কারও জিতে নিয়েছিলো এই সিনেমা। সেই সাথে সেরা অভিনেত্রীর নোমিনেশন পেয়েছিলেন কেট উইন্সলেট। IMDB এর সেরা ২৫০ সিনেমার তালিকায় এর অবস্থান ৮৭ নম্বরে। জোয়েল ও ক্লেমেনটাইন নামের দুটি চরিত্রের প্রেমের গল্প এটি। একদম হঠাৎ করেই এক ট্রেন ভ্রমণে তাদের পরিচয়। ভালোলাগার শুরুও সেখানেই। একসাথে দুই বছর কাটিয়ে দেয়ার পর আস্তে আস্তে সম্পর্ক তেঁতো হতে থাকে তাদের মাঝে। ক্লেমেনটাইন তাদের সম্পর্কের সব স্মৃতি মুছে দেয়ার জন্য একটি ফার্মকে দায়িত্ব দেয়। স্মৃতি মুছে ফেলার সেই প্রক্রিয়াতেই তারা আবার একে অপরকে ভালোবাসতে শুরু করে।
A Series of Unfortunate Events
এই সিনেমাটিও ২০০৪ সালের। অ্যাডভেঞ্চার কমেডি ধাঁচের এই সিনেমাটির পরিচালক ব্র্যাড সিলভারলিং। জুড ল, জিম ক্যারি ও মেরিল স্ট্রিপের মতো বড় তারকারা ছিলেন সিনেমাটিতে। ৪টি অস্কার নোমিনেশন ও বেস্ট মেকাপে অস্কার জয়ী এই সিনেমায় জিম ক্যারি খলচরিত্রে অভিনয় করেছেন। ভায়োলেট, ক্লস ও সানি এই তিন ভাই-বোনকে নিয়েই সিনেমার গল্প। আগুন লেগে তাদের বাড়ি পুড়ে যায়, বাবা-মাও সেই আগুনেই মারা যান। তখন তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পরে দুসম্পর্কের আত্নীয় কাউন্ট ওলাফের হাতে। সেই সুযোগে তাদের বাবা-মায়ের রেখে যাওয়া সম্পত্তি হাত করতেই উঠে পরে লাগে কাউন্ট ওলাফ। জিম ক্যারিই হচ্ছেন এই কাউন্ট ওলাফ।
The Truman Show
১৯৯৮ সালের এই স্যাটায়ার সাই-ফাই সিনেমাটির পরিচালক পিটার উইর। এই সিনেমায় ট্রুম্যান বারব্যাংক নামের একটি চরিত্রে দেখা যায় জিম ক্যারিকে। ট্রুম্যান একদিন হঠাৎ আবিষ্কার করে তার জীবন আসলে পুরোটাই বানোয়াট। সে একটি রিয়েলিটি টেলিভিশন প্রোগ্রামের অংশ যেখানের মূল চরিত্র সে নিজেই। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ তাকে পর্দায় দেখছে। তার দৈনন্দিন জীবনকেই ২৪ ঘন্টা মনিটর করা হচ্ছে, সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে টেলিভিশনে।
Man on the Moon
১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় এই সিনেমটি। বিখ্যাত কমেডিয়ান Andy Kaufman এর চরিত্রে অভিনয় করেন জিম ক্যারি। বায়োগ্রাফি-ড্রামা ধাঁচের এই সিনেমাটি তাকে গোল্ডেন গ্লোব পুরষ্কার এনে দেয়।
Yes Man
পিটন রিডের পরিচালনায় ২০০৮ সালে মুক্তি পায় এই সিনেমাটি। কমেডি-রোমান্স জনরার এই সিনেমাটির গল্প খুবই সরল। ব্যাংক লোন অফিসার কার্ল অ্যালেন সিদ্ধান্ত নেন তিনি এক বছর কোন কিছুতেই না বলবেন না। সবকিছুতে ‘হ্যা’ বলার ফলাফল নিয়েই তৈরি হয়েছে এই কমেডি সিনেমাটি।