ফলফলাদি কি শুধুই গরমকালের বিষয়? একদম না। শীতকালেও এদেশে ফলের সমাহার কোন অংশে কম হয় না। খেতে তো দারুণ বটেই, আছে বেশ কিছু ডাক্তারি গুণও। শীতের এমন কিছু ফলের কথা সবাইকে মনে করিয়ে দিতেই আজকের লেখা।
১. জলপাই
জলপাই শীতকালীন একটি জনপ্রিয় ফল। আচার হিসেবে আমাদের দেশে জলপাই প্রচুর ব্যবহৃত হয়। জলপাইয়ের পাতা ও ফল দুটোই ভীষণ উপকারী। টক জাতীয় এ ফলে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন-ই। এ ভিটামিনগুলো দেহের রোগজীবাণু ধ্বংস করে, উচ্চরক্তচাপ কমায়, রক্তে চর্বি জমে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে হৃৎপিন্ডের রক্তপ্রবাহ ভাল রাখে। এতে হৃৎপিন্ড থেকে বেশি পরিশোধিত রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছায়, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে। জলপাইয়ের খোসায় রয়েছে আঁশ জাতীয় উপাদান। এ আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়, কোলনের পাকস্থলির ক্যানসার দূর করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।
২. আমলকি
শীতের ফলগুলোর মধ্যে আমলকি আরেকটি সুস্বাদু ফল। ছোটবেলায় আমলকি খেয়ে দুষ্টুমি করে আমরা পানি খেতাম, মুখ মিষ্টি হয়ে যেত। ভর্তা হিসেবেও এটি খাওয়ার প্রচলন আছে, অনেকে আবার ডালেও আমলকি দেয়। যেভাবেই হোক, আমলকি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আমলকিকে বলা হয় ভিটামিন ‘সি’-এর রাজা। আর এই ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের সুরক্ষা, মাঢ়ি মজবুত করতে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৩. সফেদা
দেখতে খুব একটা সুন্দর না হলেও সফেদা নানা গুণে সমৃদ্ধ। সফেদায় যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি এবং বি কমপ্লেক্স রয়েছে। ভিটামিন-এ চোখ, ত্বক ও হাড়ের জন্য ভিটামিন-সি ইমিউনিটি গড়ে তোলে, এছাড়াও এই ফল ত্বক, চুল ও দাঁতের জন্যও বেশ ভালো। পাকা সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, কপার, আয়রন। এসব খাদ্য উপাদান মেটাবলিক ফাংশন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সফেদায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও সফেদা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে ও চুলের চকচকে ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। সফেদা কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৪. ডালিম
ডালিম যদিও আগের মতো পুরোপুরি শীতকালীন ফল নেই আর। প্রায় সারাবছরই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ডালিম। কিন্তু শীতের দেশি ডালিমের আকর্ষণটা বোধহউ একটু আলাদা। এই ডালিম কারো কাছে বেদানা, আবার কারো কাছে আনার নামে পরিচিত। প্রচুর ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ এই ফল হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে, রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন সি।
৫. বরই
শীতের জনপ্রিয় ফল বরই। বরই নানা জাতের হয়। যেমনঃ নারকেল কুল, আপেল কুল, বাউ কুল ইত্যাদি। মানুষ সাধারণত আচার হিসেবে বা ভর্তা বানিয়েই বরই খেয়ে থাকে। এগুলো খুবই উপকারী এবং পুষ্টিকর। ফোঁড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, প্রদহ, রক্ত আমাশায়, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা কুল, কুলের পাতা, ছাল সমাধান করতে পারে।