বৃষ্টিরা নামেন নাকি মধ্যরাতে যখন রাস্তায় দেরি করে ফেরা মানুষের সংখ্যা বলে দেওয়া যায় কর গুনে। সেই কবে শঙ্খ ঘোষ কবিতা করেছিলেন, আমার দু:খের দিন তথাগত/ আমার সুখের দিন ভাসমান/ এমন বৃষ্টির দিন পথে পথে/ আমার মৃত্যুর দিন মনে পড়ে।
বৃষ্টির দিনে মধ্যবিত্তের কিছু মনে পড়ে কি? মৃত্যুর কথা মনে না পড়লেও মানবজনম বৃথা মনে হয়। বাস-সিএনজির ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট তরীতে ছাতাসমেত বাদুড়ঝোলা হওয়াই তখন জীবনের সার্থকতা হয়ে দাঁড়ায় কিনা!
অফিসে তিন দিন লেট হলে একদিনের বেতন মার যাবে। গেল সপ্তাহে একবার কি দেরি হয়েছিল?-এই ভাবনায় বিভোর হয়ে সিএনজিওয়ালাকে পিতার শ্যালক বানিয়েও মিটারের দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হয়।
ফেরার পথে কি বাসে সিট পাওয়া যাবে? মাসের মোটে ২য় হপ্তা, বাসায় ফিরে বেগুন ভাজি দিয়ে খিচুড়ি হবে কি? ইলিশ কেনার সামর্থ্য নেই যার সে কিনা অফিসে বসে ভাবে তোমরা যারা ফেসবুকে বৃষ্টি নিয়ে কবিতা লেখ- তোমাদের কি গাড়ি আছে? নাকি উবারে চড়ো? এত বেতন কিভাবে পাও? কি জাদু জানো? আমিও জানতে চাই, আমাকে শেখাও।
অঞ্জনের আমি বৃষ্টি দেখেছি শোনার সময় মনে ভয় জাগে সামনের মাসের পারফরম্যান্স অ্যাসেসমেন্ট নিয়ে। সুতরাং লাঞ্চফেরত ঝিমন্ত বসের রুমে টোকা দিয়ে হাত কচলানোর সুযোগ হাতছাড়া করা হয় না।
অফিস ফেরতা কেরানির মতো চটিজুতো ভেজানোর দুঃসাহস গানে অঞ্জন দেখালেও তাই দেখানো হয়না মধ্যবিত্তের। বুকের ভেতর অবিশ্রান্ত জলমুক নিয়েও তার বৃষ্টি তাই থাকে অনন্ত মরুর গোপনতর কোন অন্দরে।