গহনা কিনছেন? জুয়েলার্স সম্পর্কে জেনে রাখুন ১০টি বিষয়

বিয়েশাদীর বিষয়ে গহনা একেবারে অচ্ছেদ্য অধ্যায়। খরচাপাতির চাপ তো রয়েছেই, সঙ্গে আরও বাড়তি প্রেশার। কোত্থেকে কিনবেন, কার থেকে কিনবেন—এসব ভারি দরকারি ব্যাপার। আর ডিজাইনের সাথে সঙ্গত রেখে পকেটের বাজেট কিংবা পণ্যের মান সম্বন্ধে জেনে রাখাটাও তো জরুরী! নতুবা শেষে কনফিউজ হয়ে গাইতে হবে, ‘সোনা কিনিলাম নাকি রূপা কিনিলাম’! প্র্যাকটিক্যাল এক্সপিরিয়েন্সের আগে গহনা যার কাছ থেকে কিনবেন, তার বিষয়ে অনেক কিছু জানার আছে বৈ কি!

১. স্বর্ণকার কি আপনার কথা শুনছেন?

গুণী এবং সম্মানী একটি জুয়েলার্সের স্বর্ণকার অবশ্যই বিয়ের পাত্রীর স্টাইল, প্রয়োজন আর আগ্রহের বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। ভালো একজন স্বর্ণকার আপনাকে সব ধরনের ডিজাইনই দেখাবেন, সব ধরনের দামের গহনার সাথেই পরিচয় করিয়ে দেবেন; সেই সঙ্গে আপনার জন্য উপযুক্ত ডিজাইনের গহনা কোনটি হবে আর কেন হবে—সেটিও তিনি বাছাই করতে সাহায্য করবেন।

কেনার আগে রত্ন পরখ করে নিন

২. প্রতিষ্ঠিত জুয়েলারি

স্রেফ গহনা কিনলেন আর আপনার কাজ শেষ, তা তো আর নয়। সময়ে সময়ে ডিজাইন বদলাতে, নতুন কিছু কিনতে বা বদলে নিতে আপনার জুয়েলার্সে আসতেই হবে। এ জন্য নিরাপদ হলো, প্রতিষ্ঠিত কোনো জুয়েলার্স বেছে নেওয়া এবং সেখানে দায়িত্বশীল কারো সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ যোগাযোগ ও সম্পর্ক রক্ষা করা।

৩. বিভিন্ন ঘরানার সার্ভিস পাচ্ছেন তো?

খালি বিচিত্র আর আকর্ষণীয় ডিজাইনই নয়, ভালো একটি জুয়েলারির দোকানে থাকা চাই দরকারি আরও কিছু সার্ভিস। মণিরত্নের বিষয়ে ওস্তাদ লোকেদের বলা হয় জেমোলজিস্ট। একটি ভালো জুয়েলারিতে এমন লোক থাকা কিন্তু মাস্ট। আবার গহনা মেরামতি কিংবা টুকিটাকি কাজের জন্যও চাই ভালো কারিগর।

খেয়াল রাখুন আপনার জুয়েলার্সের জেমোলজিস্ট আছে কিনা

৪. বিভিন্ন ধরনের গহনা আছে তো?

গতানুগতিক ডিজাইন আর পণ্য খুশি থাকার দিন আর নেই। আপনাকে চমকে দেওয়ার পাশাপাশি মুগ্ধ করার মতো গহনা থাকতে হবে অবশ্যই, যেটা দেখলে আপনি ভাববেন—আরে এমনটাই তো আমি মনে মনে চেয়েছি!

৫. স্বর্ণকারের জ্ঞান

যে দোকান থেকে গহনা কিনবেন, সেখানকার স্বর্ণকারের জ্ঞানগম্যিটা ভালো থাকা চাই। গহনা বা রত্ন নিয়ে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর সাথে সাথে আপনার জন্য কোন গহনাটা উপযুক্ত আর মানানসই, সেটাও তার ঠিকঠাক বোঝা চাই। স্বর্ণকার আপনার কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে দ্বিধা করলে, আপত্তি জানালে বা গড়িমসি করলে সোজা সেই দোকান ছেড়ে অন্যদিকে হাঁটা দিন।

৬. সার্টিফিকেশন পাচ্ছেন তো?

মুখে তো সবাই বলবে যে তাদের পণ্য মানের দিক থেকে সেরা আর খাঁটি। তবে সেটার কোনো লিখিত প্রমাণ কি তারা দেখাতে সক্ষম? ডায়মন্ডের ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই কোনো থার্ড পার্টি ডায়মন্ড সার্টিফিকেশন সার্টিফিকেট দেখতে চাইতে পারেন, যেটি নিশ্চিত করবে তাদের মান।

ভালো জুয়েলার্স মাত্রই ক্রেতার সন্তুষ্টির কথা মাথায় রাখে

৭. পণ্যটি খাঁটি, এটি আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে তো?

আপনি হয়তো জানেন না পণ্যটি পরখ করার প্রক্রিয়া। কাজেই স্বর্ণকারের দায়িত্ব হবে এটি কিভাবে বুঝতে হবে, তা আপনাকে শিখিয়ে দে্ওয়া। যেমন বলা যায়, আপনাকে একটি জেমোলজিক্যাল মাইক্রোস্কোপ দিয়ে ডায়মন্ডটি দেখিয়ে সেটির মান কিভাবে বুঝতে হবে, তা শিখিয়ে দেওয়া।

৮. এনগেজমেন্ট রিংয়ের মেটালটিও গুরুত্বপূর্ণ

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বর্ণকাররা রিংয়ের বিষয়ে পাথরটির মানের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেন, হয়তো আপনি নিজেও। তবে সেটাই কিন্তু সব নয়, মেটালটাও গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই মেটাল এলিমেন্টটি কেমন, সে বিষয়েও স্বর্ণকারের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

৯. প্রতিষ্ঠানের পলিসি এবং ওয়ারেন্টি

ওয়ারেন্টি এবং রিটার্ন পলিসির বিষয়ে নজর রাখুন। এ বিষয়ে যে জুয়েলার্স আপনাকে সেরা গ্রাহক সেবা দেবেন, তাকেই বাছাই করুন।

১০. এই জুয়েলার্সটিকে আপনি বিশ্বাস করেন তো?

নিজেকে প্রশ্ন করুন এ বিষয়ে। স্রেফ বিজ্ঞাপন দেখে মজে গেলে চলবে না। পরিচিতদের জিজ্ঞাসা করুন, পরখ করুন পণ্যের মান। আপনার বিশ্বাস এবং বোধগম্যতা মিলিয়ে হিসাব করুন। একান্ত বিশ্বাস সৃষ্টি হলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিন।

ছবিঃ জড়োয়া হাউস