র্যানসমওয়্যারের খপ্পরে পড়েছে গোটা বিশ্ব। আবারও সাইবার হামলা কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। দেশের প্রায় অর্ধশত কম্পিউটার এরইমধ্যে কব্জা করেছে হ্যাকাররা। আক্রান্ত কম্পিউটারের যেকোনো ফাইল খুলতে চাইলেই পয়সা চাইছে তারা। আর এই পয়সারই আদান প্রদান করা হচ্ছে বিটকয়েন দিয়ে।
বিটকয়েন কী?
সহজ কথায় বিটকয়েন হলো একটি ডিজিটাল টোকেন ব্যবস্থা যা ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকে আরেক জায়গায় অনলাইনের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যায়। অন্যভাবে বললে, ওপেন সোর্স ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটোকলের মাধ্যমে লেনদেন হওয়া এক ধরণের সাংকেতিক মুদ্রার নাম বিটকয়েন। যেখানে এই মুদ্রা লেনদেন ব্যবস্থাকে চিহ্নিত করা হয় বড় হাতের ‘বি’ আর শুধু মুদ্রাকে চিহ্নিত করা হয় ছোট হাতের ‘বি’ বর্ণ দিয়ে।
কেন হ্যাকারদের পছন্দ বিটকয়েন?
বিটকয়েনের হ্যাকারদের কাছে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাবার অন্যতম কারণ হচ্ছে গোপনীয়তা। নিজস্ব পরিচয় গোপন রেখেই বিটকয়েন আদান প্রদান করা যায়। তাই ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন বা ক্রেডিট কার্ডের মতো আন্তর্জাতিক অর্থ আদান প্রদানের ব্যবস্থার বদলে বিটকয়েনই বেছে নেয় হ্যাকাররা। কারণ এখানে নিজের পরিচয় অজ্ঞাত রেখেই তুলে নেওয়া যায় যেকোনো পরিমান অর্থ।
বিটকয়েন লেনদেনের জন্য কোন ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না। এমনকি নেই কোন কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ সার্ভারও। সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে থাকা কম্পিউটার নেটওয়ার্কেই এর ব্যাপ্তি। অনেকটা টরেন্টভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর মতো। এতে করে নেটওয়ার্কের বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠান এমনকি কোনো সরকারেরও হস্থক্ষেপ করার উপায় নেই। সেজন্য বিটকয়েনের ইউজাররাও ভোগ করেন নিজস্ব গোপনীয়তা। নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত কম্পিউটার থেকেই ইউজাররা বিটকয়েনে নিজেদের লেনদেন পরিচালনা করেন।
বিটকয়েন কীভাবে লেনদেন হয়?
বিশ্বের বেশকিছু দেশে সেদেশের মূদ্রামান অনুযায়ী বিটকয়েন কেনার ব্যবস্থা আছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে বিটকয়েন সরবরাহ করে থাকে। সাধারণ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার মতই ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুললে সেটি যুক্ত হবে ব্যবহারকারীর স্থানীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে।
এক্ষেত্রে যারা তাদের পরিচয় গোপন রাখতে চায় তাদের জন্যও আছে পৃথক ব্যবস্থা। যারা সরাসরি নগদ অর্থের বিনিময়ে বিটকয়েন লেনদেন করবে তাদের সাথে যুক্ত হয় এই পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুকরা।
বিটকয়েন গ্রহণ করাতো আরও সহজ। ইন্টারনেটের মাধ্যমে শুধু একটা অ্যাকাউন্ট খুললেই হলো। নাম পরিচয় কিচ্ছু ছাড়াই গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা হতে থাকবে বিটকয়েন।
আরেকটি কথা, যেহেতু উন্মুক্ত নিলামের মতো বিনিময় হয় বিটকয়েন সেহেতু শেয়ার বাজারের মতো সারাক্ষণ ওঠানামা করে বিটকয়েনের দামও।