দ্য লোয়ার ডেপথ্স: গল্পটা যখন নিচু তলার মানুষদের

রাশিয়ার ভোলগা নদীর তীরের এক বস্তির গল্প।  যেখানে  পৌঁছায়না সূর্যের আলো। পৌঁছায় না নির্মল বায়ুও। যেখানে মানুষগুলোর মাঝে গড়ে উঠেনি মনুষত্ববোধ। সেখানকার মাটির ঘরগুলো যেন এক একটা কুয়োর তল। যেই তলে বাস করে সমাজের অবহেলিত, শোষিত ও ছিন্নছাড়া কিছু মানুষ।  তারা কেউ চোর, কেউ জুয়াড়ি, কেউ ব্যর্থ অভিনেতা। এই সমাজে আরও রয়েছে বারবনিতা, শ্রমিক, তালার মিস্ত্রি, পশম ব্যবসায়ী ও মুচি। যাদের প্রত্যেকেরই একসময় বে‍ঁচে থাকার স্বপ্ন ছিল  কিন্তু জীবনের বাস্তবতার কাছে তারা সবাই পরাজিত। জীবনের যেই ছন্দ থাকার কথা, সেই ছন্দ আর তাদের মাঝে বিরাজমান নেই। এই অন্ধকারাচ্ছন্ন  জীবনেও আছে প্রেম, আছে মানব-মানবীর চিরাচরিত সম্পর্ক। রাশিয়ার সমাজের এই নিচু স্তরের মানুষগুলোর জীবনের প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন ম্যাক্সিম গোর্কি। ‘লোয়ার ডেপথ্স’ নাটকে। যিনি তার লেখনীতে বরাবরই রাশিয়ার সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের বাঁকগুলো তুলে ধরেছেন নিখুঁতভাবে।
আর তার রচিত এই নাটকটিই মঞ্চস্থ হতে চলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ব্যবস্থাপনা ও প্রযোজনায়। বাস্তুহারা, রাষ্ট্রহারা ও শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির প্রত্যয়ে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে  থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের এই আয়োজন।

ম্যাক্সিম গোর্কি রচিত ‘লোয়ার ডেপথ্স’ নাটকটির অনুবাদ করেছেন তানভীর মোকাম্মেল ও নির্দেশনা দিয়েছেন থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক তানভীর নাহিদ খান।  এতে অভিনয় করেছেন বিভাগের ৩য় বর্ষ ৫ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা। নাটকটি আগামী ৭-১১ ই মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমন্ডল মিলনায়তনে প্রদর্শিত হবে।
ম্যাক্সিম গোর্কি তাঁর সাহিত্যচর্চায় বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে তুলে ধরেছেন। এমনি এক বাস্তবতার গল্প নিয়ে রচিত নাটক লোয়ার ডেপথ্স। যে নাটকটি ক্লাসিক বা ধ্রুপদী  নাটকের মধ্যে স্থান নিয়েছে।  যেই নাটকের হাহাকারের এই সময়ের মধ্যে এক বৃদ্ধ ভবঘুরের আগমণ ঘটে, যে জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়া মানুষগুলোকে স্বপ্ন দেখায়, স্বপ্ন দেখায় ঘুরে দাঁড়ানোর, আবার নতুন করে শুরু করার।একদিকে মানুষগুলোর হতাশা ও দুর্দশার চরম নিগড়ে বন্দী জীবন অন্যদিকে এই দুর্দশার চক্র থেকে বেরিয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখা ও তার অনিশ্চয়তা এটাই লোয়ার ডেপথ্স নাটকের প্রধান উপজীব্য।