গ্র্যামির রানী অ্যাডেল

অ্যাডেল ল্যারি ব্লু অ্যাডকিন্স, পৃথিবীজোড়া শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় অ্যাডেল নামে। সংগীতে প্রডিজি বলা চলে তাকে- ১৯৮৮ সালে লন্ডনে জন্ম নেয়া এই শিল্পীর গান গাওয়ার শুরু বয়স যখন মাত্র ৪ বছর, টিন-এজ চলাকালীন বছরগুলোতে মানুষজন চিনতে শুরু করে তাকে। অনেক গান করেননি তিনি, গত আট বছরের ক্যারিয়ারে অ্যালবাম মাত্র তিনটি। অ্যালবামের নামকরণের ধাঁচও নিজস্ব- ১৯, ২১ আর ২৫। পুরষ্কারের অভাব নেই অ্যাডেলের ঝুলিতে। একটা অস্কার জিতেছেন জেমস বন্ড ফিল্ম স্কাইফল এর সূচনাসঙ্গীতের জন্য, ৯ বারের ব্রিট অ্যাওয়ার্ড, একটা গোল্ডেন গ্লোব আর ১৮ বার জনপ্রিয় মূলধারার সংগীতের জন্য পেয়েছেন বিলবোর্ড অ্যাওয়ার্ড। তবে অ্যাডেল এর জন্য সবচেয়ে পয়মন্ত মনে হয় গ্র্যামির মঞ্চই। আজ ৫ এপ্রিল, অ্যাডেলের ৩০তম জন্মদিন; জেনে আসা যাক গ্র্যামির অ্যাডেলকে-

২০০৮ সালের ৫১তম উৎসবে অ্যাডেলের গ্র্যামিযাত্রা শুরু। তার প্রথম এলবাম ১৯ এর দ্বিতীয় সিংগেল চেজিং পেভমেন্টস– এর জন্য সেরা নারী পপ শিল্পীর পুরষ্কার পান তিনি, বছরের সেরা নতুন শিল্পীর পুরষ্কার জেতেন। কৈশোর শেষের ব্যর্থ প্রেম নিয়ে লেখা এই গানের পারফরমেন্স দিয়ে সেই বছরই তার গ্র্যামিতে গাওয়ার সূচনা হয়।

হোমটাউন গ্লোরি– লন্ডনের দক্ষিণ নরউডের নিজের শহর নিয়ে লেখা নস্টালজিক একটা গান; এলবাম ১৯ শুরু হয় এই সিঙ্গেল দিয়ে। এই গানের জন্য ২০০৯ এর ৫২ তম গ্র্যামিতেই সেরা নারী পপ শিল্পীর পুরষ্কার পেয়ে গেলেন আবার। ব্যক্তিগত সম্পর্ক আর বিরহের আবর্তে ঘুরপাক খাওয়া লিরিক, ব্লু-আইড সোল ঘরানার সংগীত বোদ্ধা-সমালোচকদের পছন্দ হলো- প্রজন্মের একজন প্রধান সংগীতকার হিসেবে তার নাম ছড়াতে শুরু করলো।

অ্যাডেলের প্রথম এলবাম

২০১১ সাল, পাঁচটা সিংগেল নিয়ে বের হলো তার দ্বিতীয় এলবাম- ২১। ৫৪তম গ্র্যামি উৎসব; আবারো গ্র্যামি কাঁপিয়ে দিলেন অ্যাডেল- এবার অ্যাওয়ার্ড ৫টা। সেরা পপ ভোকাল এলবাম আর এলবাম অফ দ্য ইয়ার হলো ২১, প্রথম গান রোলিং ইন দ্য ডিপ পেল সং অফ দ্য ইয়ার এবং রেকর্ড অফ দ্য ইয়ার। দ্বিতীয় গান সামওয়ান লাইক ইউ সেরা একক পপ পারফরমেন্স। পরের বছর আবার জিতলেন সেরা একক পপ পারফরমেন্স এর গ্র্যামি। একই এলবামের সেট ফায়ার টু দ্য রেইন এর লাইভ ভার্শন এর জন্য।
এরপর বড় একটা বিরতি; ২০১২ তে আডেল লিখলেন গাইলেন স্কাইফল– এটার জন্যও সেবছর গ্র্যামি পেলেন একটা। ২০১৫ তে প্রায় পাঁচ বছর দীর্ঘ বিরতির পর বের হলো ২৫। সাথে সাথে বিশাল সাফল্য, ৩২টা দেশের চার্ট-এ টপ করলো এলবামটা। বোদ্ধারা বললেন অ্যাডেল ফিরতে চাইছেন তার পুরনো সত্ত্বায়, তার নস্টালজিয়ায়। প্রধান সিঙ্গেল হ্যালো-র মিউজিক ভিডিও ইউটিউবে তোলপাড় চালালো- ১০০ মিলিয়ন ভিউ হলো ৫ দিনে, বিলিওন ভিউ এ সাই এর গ্যাংনাম স্টাইল-কে ছাড়িয়ে গেলো। রোলিং স্টোনস এই এলবাম-কে পাঁচে পাঁচ রেট করলো।

২০১১-র গ্র্যামিতে অ্যাডেল

২০১৬, ৫৯তম গ্র্যামি- আবার প্রধান পাঁচটা অ্যাওয়ার্ড জিতলেন আডেল। সেরা পপ অ্যালবাম, এলবাম অফ দ্য ইয়ার পেল ২৫; হ্যালো সিঙ্গেলটা হলো সং অফ দ্য ইয়ার, রেকর্ড অফ দ্য ইয়ার আর সেরা একক পপ পারফরমেন্স।

মোট আঠারো বারের মনোনয়নে পনের বারই গ্র্যামি জিতেছেন অ্যাডেল। ২০১৬-র এলবাম অফ দ্য ইয়ার পাওয়ার পরে অ্যাওয়ার্ডটা দু’টুকরা করে অর্ধেক তিনি বিয়োন্সে-কে দিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছেন- ‘আমার কাছে বিয়োন্সের লেমোনেড এই বছরের সেরা এলবাম’। ‘আমি চোখের জন্য না, কানের জন্যই গান বানাই’- বলেছেন এই সময়ের অসম্ভব প্রতিভাবান এই শিল্পী। শুভ জন্মদিন অ্যাডেল!