অনেক অভিযোগ, বিতর্ক ছাপিয়ে দর্শকনন্দিত হয়েছিল নেটফ্লিক্স অরিজিনাল সিরিজ নার্কোস। কলম্বিয়ান ড্রাগ লর্ড পাবলো এসকোবারের জীবনের উত্থান-পতনের গল্পে দর্শক এমন মজেছিল, যে এর পরবর্তী সিরিজটি বানাতে মোটেও দ্বিধা করেনি নেটফ্লিক্স। এবারে, কলম্বিয়ার জাদুবাস্তবতা ছেড়ে ফিলিপাইনের জঙ্গলে যাচ্ছে গল্প। ড্রাগ-ক্রাইম ঘরানার নতুন যে সিরিজ নির্মাণ করেছে নেটফ্লিক্স, তার নাম- ‘অ্যামো’।
এশিয়ার ট্রাম্প ফিলোপিনো প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তের চলমান মাদকবিরোধী যুদ্ধের পরিস্থিতির সাথে সঙ্গত মিলিয়েই মঞ্চ সাজানো হয়েছে গল্পের। ‘অ্যামো’ নির্মাণের দায়িত্ব ছিল ফিলিপিনো পরিচালক ব্রিলান্তে মেন্দোজার। জোসেফ নামের এক বিপদগ্রস্ত টিনেজার কিভাবে ম্যানিলার আন্ডারগ্রাউন্ড জগতের অন্ধকারে জড়িয়ে যায়—সেই গল্প জানা যাবে ‘অ্যামো’ থেকে। আর সেই সঙ্গে খতরনাক সব ড্রাগ লর্ড, অর্থলিপ্সু আইন-শৃঙখলা বাহিনী আর দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বয়ান তো থাকছেই; ঠিক যেমনটি ছিল এসকোবারকে নিয়ে তৈরি ‘নার্কোস’ সিরিজেও। এসব মিলিয়েই আসছে ৯ এপ্রিল মুক্তি পেতে যাওয়া ১২ পর্বের এই সিরিজকে ফিলিপাইনের ‘নার্কোস’ মনে করা হচ্ছে। নেটফ্লিক্সের কনটেন্ট অ্যাকুইজিশন বিভাগের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রবার্ট রয় অ্যামো নিয়ে দারুণ আশাবাদী। তিনি জানিয়েছেন, এই সিরিজে থাকবে সাসপেন্সের ছড়াছড়ি। দুনিয়াজোড়া থ্রিলার ভক্তদের মন জিতে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ‘অ্যামো’র গল্পে।
তবে যে সিরিজের কাহিনি মাদক আর খুনখারাপি নিয়ে, তা নিয়ে তো আলাপ-আলোচনা নানা ঘরানার হতেই পারে। ‘নার্কোস’ এর ক্ষেত্রে যেমন ছিল, ‘অ্যামো’র ক্ষেত্রেও তেমন প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মাদকের বিরুদ্ধে রীতিমতো যখন যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, তখন এমন সিরিজের গল্প আসলে কোন কায়দায় দেখানো হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হতেই পারে! সরকারি হিসেব অনুযায়ীই, মাদক নিয়ে যুদ্ধ বা লড়াইয়ে ফিলিপাইনে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। অবশ্য পরিচালক মেনডোজা নিজেও প্রেসিডেন্টের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তিনি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট সিরিজটি দেখেছেন কি না তিনি জানেন না, তবে প্রেসিডেন্টের ‘প্রতিনিধিরা’ দেখেছেন এবং তাদের এটি বেশ ‘পছন্দ’ হয়েছে।
ফিলিপাইনের সাধারণ দর্শকরা জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কিম্বারলি কোসিনজার নামের এক তরুণ ছাত্র ‘অ্যামো’ নিয়ে দারুণ আশাবাদী। আবার গ্যাব বোনিফাসিও নামের আরেক দর্শকের ধারণা, এই সিরিজেও মাদককে শেষতক ‘গ্ল্যামারাইজ’ করেই তোলা হবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি টেনেছেন ‘এল চ্যাপো’ বা ‘ব্রেকিং ব্যাড’ এর মতো জনপ্রিয় সিরিজের নাম। জবাব মিলবে অবশ্য কয়েক দিনের মধ্যেই, ‘অ্যামো’ ফিলিপাইনের; তথা নেটফ্লিক্সের ‘নতুন নার্কোস’ হয়ে উঠছে কি না!