মারভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের ১৯তম সিনেমা হতে যাচ্ছে অ্যাভেঞ্জার্সঃ ইনফিনিটি ওয়ার। আর এই পর্বেই অ্যাভেঞ্জার্সরা নিজেদের এযাবৎকালের সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রু, থানোসের মুখোমুখি হবে। এপ্রিলের ২৩ তারিখ মুক্তি পেতে চলা এই সিনেমাটির জন্য দীর্ঘকাল ধরেই অপেক্ষা করে আছেন সুপারহিরো সিনেমা-পাগল ভক্তরা। কেননা, এই সিনেমাতেই যে খুলবে অনেক রহস্যের জট। অনেকেই আটঘাঁট বেঁধে নিচ্ছেন প্রস্তুতিও। সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের আগের সিনেমাগুলো দেখে ঝালিয়ে নিচ্ছেন কাহিনীর সব ছোটখাটো বাঁক। আর করবেনই না কেন? ইনফিনিটি ওয়ার দেখার পুরো আনন্দ পেতে হলে যে আগের সবকিছু জেনে রাখা খুব প্রয়োজন। তবে ১৮টি সিনেমা রিভিশন দেওয়া বেশ কষ্টসাধ্যই বটে। বেছে বেছে ৫টি সিনেমা দেখে নিলেই কিন্তু ইনফিনিটি ওয়ার দেখার জন্য আপনি প্রস্তুত।
১. দ্য অ্যাভেঞ্জার্স
২০০৮ সালে ‘আয়রন ম্যান’-এর প্রথম কিস্তি দিয়ে মারভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের যাত্রা শুরু। এই সিরিজের ৬ নম্বর সিনেমা ‘দ্য অ্যাভেঞ্জার্স’। মনে হতেই পারে, এর আগের ৫টি সিনেমায় কি দেখার কিছুই নেই নাকি? অবশ্যই আছে। কিন্তু, ইনফিনিটি ওয়ারের মূল গল্প যে ইনফিনিটি স্টোনকে কেন্দ্র করেই। আর সেদিক দিয়ে ভাবলে ‘দ্য অ্যাভেঞ্জার্স’-এ প্রথম ইনফিনিটি স্টোনের গল্প দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হয়।
তাছাড়া আয়রন ম্যান, থর, ক্যাপ্টেন আমেরিকাঃ দ্য ফার্স্ট অ্যাভেঞ্জার- এ সিনেমাগুলো ছিলো দর্শকদের সাথে অ্যাভেঞ্জার্সের একেকটি চরিত্রকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। ‘দ্য অ্যাভেঞ্জার্স’ প্রথম এই সুপারহিরোদের একত্র করে, এবং পৃথিবীবাসীদের থানোসের যন্ত্রণা দেয়ার শুরুও কিন্তু এ সিনেমা থেকেই। তাই, ইনফিনিটি ওয়ার দেখার প্রস্তুতি হিসেবে অবশ্যই দেখে নিন এই সিনেমাটি।
২. গার্ডিয়ানস অব দ্য গ্যালাক্সি
এরপর টানা ৩টি সিনেমা বাদ দিয়ে আমরা একবারে চলে যাবো গ্রুটের দুনিয়ায়। কারণ, এই সিনেমাতেই প্রথম ইনফিনিটি স্টোনের পেছনের গল্প, কি কি সম্ভব এই পাথর দিয়ে, থানোস কেন পাগলের মতো ইনফিনিটি স্টোনগুলোকে খুঁজে বেড়াচ্ছে- এসব বিষয় উঠে আসে সিনেমা হলের পর্দায়। তাছাড়া, মারভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের গল্প যে পৃথিবীর বাইরেও বহুদূর বিস্তৃত সে সম্পর্কেও কিন্তু দর্শকরা এই সিনেমার মাধ্যমেই প্রথম জানতে পারেন। আর মহাপরাক্রমশালী থানোসকে প্রথমবারের মতো বড় পর্দাতেও দেখা গিয়েছিলো এই সিনেমাতে। তাই, রিভিশনের লিস্টে গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি থাকছেই।
৩. অ্যাভেঞ্জার্সঃ এইজ অব আলট্রন
এই সিনেমাটির আসলে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করার বেশ কিছু কারণ আছে। সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের ১১তম এই সিনেমায় ইনফিনিটি স্টোনের ব্যাপারে অ্যাভেঞ্জার্সরা প্রথম বার বিস্তারিত ভাবে জানতে ও বুঝতে পারে। এবং এই পর্বে মূল সুপারভিলেইন যে থানোসই সেটাও পরিষ্কার হয়ে ওঠে। পোস্ট ক্রেডিট সিনে থানোসকে দেখাও যায় আরেকবার। নিজেই ইনফিনিটি স্টোনগুলো যোগাড় করতে পৃথিবীতে যাচ্ছে থানোস, এরকম এক হুঙ্কার দিয়ে শেষ হয় সিনেমাটি। অ্যাভেঞ্জার্স বনাম থানোস যুদ্ধের শুরু বলতে গেলে এ পর্ব দিয়েই। তাই দেখে নিতে পারেন এই সিনেমাটিও একবার।
৪. ক্যাপ্টেন আমেরিকাঃ সিভিল ওয়ার
সুপারহিরোদের দায়িত্ববোধ যে তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে, এই সিনেমাটি সেটাই আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছিল দর্শকদের। তাছাড়া, এতটা পথ পাড়ি দিতে গিয়ে প্রত্যেকটি সুপারহিরো চরিত্রই একটু-আধটু পাল্টেছে। সেই বদলে যাওয়া চরিত্র নিয়েই কিভাবে তারা আবারও এক হয়ে থানোসের মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত হয় তা জানার জন্য হলেও দেখতে হবে এই সিনেমাটি। সেই সাথে স্পাইডারম্যান ও ব্ল্যাক প্যানথার কি করে গল্পের অংশ হলো তা ভুলে গেলে কিন্তু এই সিনেমাটি রিভিশন লিস্টে রাখা মাস্ট।
৫. ডক্টর স্ট্রেইঞ্জ
মারভেল সিনেমার জগৎ যে শুধুই বাস্তবতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না, বরং প্রায়ই বাস্তবতা ভেঙেচুড়ে পরবাস্তবতার দুনিয়ায় প্রবেশ করে গল্পের ডালপালা, তা দর্শকদের সামনে ঠিকঠাক তুলে ধরতে পেরেছিলো ডক্টর স্ট্রেইঞ্জ। গুণগত মান বিচারে সিনেমাটি আহামরি কিছু না হলেও, ইনফিনিটি স্টোনের স্টোরিলাইনে এই সিনেমার অবদান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এই সিনেমায় ডক্টর স্ট্রেইঞ্জ ও তার পরবাস্তবতার জগৎ নিয়ে জানা যাবে।
তাছাড়া, ডক্টর স্ট্রেইঞ্জের কাছেই আছে মাইন্ড স্টোনটি। তাই, থানোসের প্রধান শিকার ডক্টর স্ট্রেইঞ্জ। এসবকিছু মিলিয়ে, ইনফিনিটি ওয়ারের পুরো গল্প এক নিমিষে বুঝতে হলে, এই সিনেমাটিকে রিভিশন লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া যাবে না কিছুতেই।