ওটা কি ফ্লাশ? ওটা কি থর? নাকি স্পাইডারম্যান ভিলেন ইলেক্ট্রো? পোস্টার ছাড়ার পর জনমনে কতোই না প্রশ্ন। শেষমেশ সব জল্পনা-কল্পনার আংশিক অবসান। কারণ সবে তো টিজার রিলিজ।
সামনে ট্রেলার বেরুবে, তারপর মুভি আসবে। এখনো অনেক কৌতুহলের নিবারণ বাকি। দেশের প্রথম সুপারহিরো মুভি বলে কথা। দর্শকের মনে আগ্রহ থাকবেই।
দেশের প্রথম সুপারহিরো মুভি কি না এ নিয়ে তর্ক উঠতে পারে। যদি নাকি আপনি সুপারম্যান বা রোবোকপ থুক্কু শক্তির লড়াইকে বিবেচনায় নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে অবশ্য ‘মেশিনম্যান’-কেও কনসিডারেশনে রাখতেই চাইতে পারেন কেউ কেউ।
ওক্কে… এবার কথা না বাড়িয়ে আলোচ্য টিজার থেকে আমরা কী কী শিখলাম সেটায় মনোনিবেশ করা যাক।
সাড়ে সাত লক্ষ কোটি মানুষের বাস! ডুড্, সিরিয়াসলি? পৃথিবীর জনসংখ্যা সাড়ে সাতশো কোটি-ই কি হয়েছে? আচ্ছা… দাঁড়ান দাঁড়ান। এটা তো সায়েন্স ফিকশন। তাহলে চলুন ধরে নিচ্ছি এই চেনাজানা ‘পৃথিবী’ নয়, এখানে বলা হচ্ছে অন্য কোনো ‘পৃথিবী’র কথা। হয়তো এই সোলার সিস্টেমেরই অন্য কোনো চিপাচাপার, কিংবা এই ‘পৃথিবী’ আজ থেকে লক্ষ কোটি বছর পরের ভবিষ্যতের। এটা জানতে হলেও তো মুভিটি দেখতে হবে।
আহা! মিশা!! ধারণা করা যায় তিনি যথারীতি খলচরিত্রেই থাকছেন। এবং গেটআপ-সেটআপে পরিষ্কার তিনি একজন সম্পদশালী ভিলেন। কিন্তু তিনি কতোটা খল? তিনি কি হার্ভে ডেন্ট পর্যায়ের? নাকি তার আদর্শ লেক্স লুথার? তারও কি থাকছে কোনো সুপারপাওয়ার? নাহ্ আগ্রহ বেড়েই চলছে যে মুভিটা দেখার।
টিজারের এই পর্যায়ে আমরা দেখতে পাই দু’জন ছবি বা ভিডিও করায় ব্যস্ত, কিন্তু দু’জন নির্লিপ্ত। কেন দু’জনের এই নির্লিপ্ততা? এ যেন ঘুণে ধরা আমাদের সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। যাতে কিছু মানুষ সক্রিয়, বাকিরা দর্শক। কিন্তু কী ক্যামেরাবন্দি করায় ব্যস্ত তারা??
ওহ্ এই তাহলে কথা! জনগণের কাছে কি তবে ধরা পড়ে গেলো ‘বিজলী’র সিক্রেট আই মিন গোপন খবর?? ভিডিওসহ কি সে সিক্রেট ছড়িয়ে পড়লো অন্তর্জালের দুনিয়ায়??
সে কী! বিজলী দৌড়ুচ্ছে কেন? কীসের এত তাড়া?? বিজলী, যেয়ো না… জেমস ভাই কি এমন পরিস্থিতিতেই নিচের গানটি তৈরি করেছিলেন??
ওএমজি! এই প্রথম পাওয়া গেলো বিজলী’র কোনো একটা সুপার পাওয়ারের দেখা। সে কি ফ্লাইট! আর সে কি স্মুদ ল্যান্ডিং!! যদিও হেটার্সরা বলবে কৃশ-এর নকল! ডাবল হেটার্সরা আবার কৃশ কীসের নকল তা নিয়ে ফাইট করবেন।
ওহো! এ আবার কাকে দেখলাম! এ যে ট্র্যাকস্যুট পরে হাসিমুখে সিরিয়াস ইলিয়াস কাঞ্চন। কী ভূমিকায় থাকতে পারেন তিনি? বিজলী-র ট্রেইনার? ট্র্যাকস্যুট যেহেতু গায়ে, নিশ্চয়ই দৌড় করাতে এসেছেন। সুপার পাওয়ার হিসেবে তড়িৎগতিও নেই তো?
আর এইমাত্র কোনো রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার না করেই যানজটকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে গেলেন বিজলী। তবে তিনি এখনো ছুটছেন কেন? এখনো কীসের এত তাড়া তার?
সাধারণ নীল নয় এ ভিলেনের চোখ। এনার সুপার পাওয়ার আছেই আছে।
যখন শুক্রবারেও আম্মু ডাল আর সবজি দিয়ে ভাত খেতে দেয়।
ঘুণে ধরা সমাজের আরও একটি রূপক চিত্র। পরীক্ষার সময় ভুল উত্তর বলে এভাবেই আপনার অজান্তে পিঠে ছোরা বসিয়ে দেয় বন্ধুবেশী শত্রুরা। কীভাবে এদের কাছ থেকে সাবধান থাকবেন জানতে হলে, হলে গিয়ে বিজলী দেখতে হবে।
ক্যারেক্টারের কিন্তু শেষ নেই। এখানে আরো দু’টি চরিত্র দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যে বিশেষ কস্টিউম পরিহিত নারী অ্যান্টাগোনিস্ট রয়েছেন। আর আছেন সম্ভবত ডেডপুল-এর কাছ থেকে দু’টো ‘কাটানা’ সামলানোর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন। পেছনে শ্রেষ্ঠাংশে বিজলী।
স্পয়লারের কিছু নাই। যার নাম বিজলী, তার দেহে বিজলী থাকবে এটাই অনুমেয়। তাই হয়েছে। তবে এখন এক্স-মেনের ওমেগা লেভেল মিউট্যান্টদের কথা বেশ মনে পড়ছে। বিশেষ করে ‘স্টর্ম’-কে।
অনেক হয়েছে সারকাজম। বিজলী-কে নিয়ে খুব মজা করছেন তো? বিজলী-কে পাত্তা দিচ্ছেন না তো? সামনে আসছে গ্রীষ্মকাল। গরম বাড়বে। তখন মাথার উপর যখন ফ্যান ঘুরবে না তখন বুঝবেন বিজলির কদর। তাই আসুন ‘বিজলী’কে প্রোমোট করি।
রিলিজ ডেটটাও মারাত্মক! ১৩ এপ্রিল। দাবদাহের মাস চৈত্রের শেষদিন। ওই গরমে ‘বিজলী’দর্শনে যাচ্ছেন কে কে?