কে এই ওয়ান্ডার ওম্যান?

গ্যাল গ্যাডটের মুচকি হাসি, মন ভোলানো চাহনি দেখে পাগল হয়েছে অনেক ডিসি ফ্যান। ওয়ান্ডার ওম্যান চরিত্রে এই লাস্যময়ী ইসরায়েলি অভিনেতার অসাধারণ অভিনয় ও দুর্দান্ত অ্যাকশন সিনও অনেককেই নতুন করে আগ্রহী করে তুলেছে কমিকের ওয়ান্ডার ওম্যানের ব্যাপারে। আর ডিসি কমিকস ফ্যানরা তো আগে থেকেই মেতে ছিলেন এই আমাজন কন্যাকে নিয়ে।

কমিকস ইতিহাসের অন্যতম প্রাচীন চরিত্র ওয়ান্ডার ওম্যান। গোল্ডেন এইজ কমিক যুগে মর্ত্যে তার আগমন। ১৯৪১ সালে কমিকবুকে আসার পর থেকে এখন অবধি হাজারেরও বেশি ইস্যু হয়েছে ডায়ানা প্রিন্সকে নিয়ে। কার্টুন, টেলিভিশন সিরিজ তো আগেই ছিল, আস্ত সিনেমাও এসেছে এই নারী সুপার হিরোর।

ওয়ান্ডার ওম্যান এই পৃথিবীর হয়েও ঠিক পৃথিবীর নন। আমাজন নামের এক নারী যোদ্ধাদের বংশে জন্ম ডায়ানার। তিন হাজার বছরেরও পুরোনো অমর এই আমজনিয়ানরা পৃথিবীর মধ্যেই এক দ্বীপে তৈরি করেছে নিজেদের রাজ্য। প্যারাডাইস আইল্যান্ড বা থেমিসিরা নামের এই দ্বীপ রাজ্যে নাকি প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার সময় থেকেই কোন পুরুষের স্থান নেই। এই রাজ্যের রানীর নাম হিপ্পোলিটা। আর তার কন্যাই ডায়ানা প্রিন্স ওরফে ওয়ান্ডার ওম্যান।

ওয়ান্ডার ওম্যানের প্রথম ইস্যু

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে প্যারাডাইস আইল্যান্ডে ক্র্যাশ করে পাইলট স্টিভ ট্রেভর। ডায়ানাই উদ্ধার করে ট্রেভরকে। ট্রেভরকে সে আবার সাধারণ মানুষের দুনিয়ায় ফিরিয়ে নিতে চায়। কিন্তু মনুষ্য লোকালয় কি আমাজনিয়ানদের জন্য নিরাপদ? একদমই না। ঠিক হলো, এক প্রতিযোগিতা হবে। তাতে শ্রেষ্ঠ যোদ্ধাই ট্রেভরকে আমেরিকা ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো দুঃসাহসী কাজের দায়িত্ব পাবে। ততদিনে ডায়ানার মনে ট্রেভরের জন্য একটু একটু করে ভালোবাসা জমতে শুরু করেছে। তাই ছদ্মবেশ নিয়ে সেও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

কাদামাটিতে গড়া হয়েছিল ওয়ান্ডার ওম্যান

হিপ্পোলিটা কাদামাটি দিয়ে গড়েছিলো ডায়ানাকে, আর সেই প্রতিমায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন ভালোবাসা আর সৌন্দর্য্যের দেবী আফ্রোদিতি। এতেও শেষ হয়নি, গ্রিক দেবতারা খুশি হয়ে তাকে দিয়েছিলেন নানা রকমের ক্ষমতা। তাই প্রতিযোগিতায় জিততে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি তাকে। এর পুরস্কার হিসেবেই মায়ের কাছ থেকে ডায়ানা তার ওয়ান্ডার ওম্যান কস্টিউম উপহার পায়।

প্রথম দিকে ওয়ান্ডার ওম্যানের স্কিল সেটে এত পাওয়ার ছিলো না। যদিও তার শারীরিক ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। দৌড়াতে পারেন ঘন্টায় ৮০ মাইলেরও অধিক গতিতে। প্রতিফলিত করতে পারেন বুলেট, আছে হিলিং পাওয়ারও। ট্রুথ অব ল্যাসো, ইন্ডেস্ট্রাকটিবল ব্রেইসলেট, প্রোজেকটাইল টিয়ারা, তরবারি, শিল্ড সবকিছু মিলিয়ে বর্তমান ওয়ান্ডার ওম্যান তো সুপারহিরো নন, বরং আস্ত একটা অস্ত্রাগার।

ওয়ান্ডার ওম্যান কমিক কাভার

কমিকসের দুনিয়াতে এতটা বলিষ্ঠ নারী সুপারহিরো অনেক খুঁজেও আর একটি পাবেন না। তাই তো, দর্শকরা বা কমিকপ্রেমিরা কখনোই মুখ ফিরিয়ে নেয়নি এই চরিত্র থেকে। আজও ডিসি কমিক্স থেকে নতুন নতুন ইস্যু বের হচ্ছে ওয়ান্ডার ওম্যানকে নিয়ে। সিনেমার বক্সঅফিস সাফল্যও প্রমাণ করে, বড় পর্দায়ও এই আমাজনিয়ান কমিকের মতোই উজ্জ্বল। তাই তো, এক হাতে সোনালী ল্যাসো আর এক হাতে তরবারিসহ ওয়ান্ডার ওম্যান যেন সবখানেই এক ওয়েস্টার্ন দেবী!