শীতকালের ভালোবাসা, কাশ্মীরি শাল

হেমন্তের কনকনে হাওয়া বইতে শুরুর বেশ আগেই জমে ওঠে শীতের পোশাকের বাজার। নিত্য নতুন শীতের পোশাকের খোঁজে গৃহিনীদের দৌড়ঝাঁপ চলে প্রতিবছরই। ফ্যাশন বদলায়, বদলায় দোকানিদেরও হালচাল। সেই ধূসর ছেলেবেলা থেকেও আজকের এই নতুন বছরে গেল ৫০ বছরের সবচেয়ে কম তাপমাত্রার সময়েও মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতেই রয়েছে কাশ্মীরি শাল। বছর ঘুরে শীতের মাত্রার রকমফের হয়, কোন কোন বছর তো শীতের অভাবে ক্ষতির হিসেবে কষতে বসেন পোশাক বিক্রেতারা। কিন্তু নিজের আলমারির এক কোণায়, পছন্দের উপহার হিসেবে পেতে কিংবা কাউকে উপহার দিতে কাশ্মীরি শালের কোন বিকল্প আজও হয়নি। কি আছে এই কাশ্মীরি শালে? নামটাই বা ‘কাশ্মীরি’ কেন?

চলুন তবে জেনে নিই কাশ্মীরি শালের কিছু আলাপ, এই শীতে-

-কাশ্মীরি শালের মূল রহস্য কিন্তু আসলেই কাশ্মীরেই লুকিয়ে আছে। উত্তর ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর প্রদেশের বিশেষ প্রজাতির ছাগলের লোম থেকে সংগ্রীহিত সুতা থেকে এই শাল তৈরি হয়।

– সেই ১৬শ শতক থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ শালের উৎপাদন শুরু, তৎকালীন রাজা জয়নুল আবেদীনের হাত ধরে।

– কাশ্মীরি তাঁতীদের আবাসন গড়ে উঠেছে মূলত অমৃতসর, এবং পাঞ্জাবের বিভিন্ন স্থানে; বুনন চলে সেখানেই।

– কাশ্মীরি শালও দুই রকমের; সরাসরি তাঁতীদের হাতে তৈরি শাল এবং এমব্রয়ডারি মেশিনে তৈরি শাল। নাম তাদের Tilikar এবং Amlikar।

– কৌণিক নকশা কাশ্মীরি শালের অন্যতম বৈশিষ্ট।

তবে কাশ্মীরের এই বিশেষ প্রজাতির ছাগলের লোম থেকে পাওয়া সুতোয় তৈরি এই শালের মাঝে শুধু কাশ্মীরি শালই একমাত্র নয়। সবচেয়ে সুন্দর শালটির নাম ‘পাশমিনা’; দূর দিগন্তে যার প্রসার ঘটিয়েছেন মুঘল সম্রাটরা। কাশ্মীরের এই বিশেষ সুতোয় বোনা ‘দো-শালা’-এর বিশেষ ভক্ত ছিলেন মুঘল সম্রাট আকবর। উত্তর ভারতের এই শালের জনপ্রিয়তা ইউরোপিয়দেরও ঘরেও বেশ দেখতে পাওয়া যায়। আর আমাদের দেশে তো কথাই নেই।