থ্যানোস কে হারাতে পারেন যারা

বক্স অফিসে হলিউডের অধঃপতনের সময়ে বুক চিতিয়ে দর্শককে হলে টেনে নিয়ে আসছে মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের চলচ্চিত্রগুলো। জনপ্রিয় কমিক্স মার্ভেলের চরিত্রগুলো অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো সবগুলোই প্রযোজকদের পকেট ভারী করে চলেছে, পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে আয়রনম্যান, ক্যাপ্টেন আমেরিকা, স্পাইডারম্যান, ডক্টর স্ট্রেঞ্জ, হাল্ক প্রভৃতি সুপারহিরোদের পরিণত করছে কিংবদন্তীতে। সতেরটি চলচ্চিত্র মুক্তির পর এখনো মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে আরো বেশ কিছু চলচ্চিত্র। ইতমধ্যেই চরিত্রগুলোকে একসাথে নিয়ে নির্মিত “অ্যাভেঞ্জারসঃ ইনফিনিটি ওয়ার” এর ট্রেইলার অন্তর্জালে ঝড় তুলেছে। চলচ্চিত্রটি নিয়ে দর্শকদের অতিরিক্ত উত্তেজনার কারণ শুধুমাত্র অ্যাভেঞ্জারসদের পাশাপাশি গার্ডিয়ানস অফ দ্যা গ্যালাক্সিকেও একই সাথে পর্দায় দেখা নয়, বরং সুপারভিলেইন থ্যানোস এর উপস্থিতি।

ইনফিনিটি ওয়ার

চলচ্চিত্রগুলো ক্রমাগত অগ্রযাত্রায় দর্শকদের কাছে এটা ইতমধ্যেই পরিস্কার সকল ঝামেলার মূলে রয়েছে দূর গ্রহের এক দানবাকৃতির খল, থ্যানোস। আগের বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে পেছনে কলকাঠি নাড়লেও এবারই প্রথম সরাসরি মুখোমুখি হচ্ছেন পৃথিবী এবং বিশ্বজগতের অন্যান্য সুপারহিরোদের। থ্যানোসকে হারাতেও বিভেদ ভুলে এক হতে হবে পৃথিবীর সকল সুপারহিরোদের, পাশাপাশি দূরগ্রহ থেকে আসতে হবে থর এবং গার্ডিয়ানস অফ দ্যা গ্যালাক্সির সদস্যদের। ইনফিনিটি স্টোনের লোভে উন্মত্ত থ্যানোসকে রুখতে হবে সকল স্টোন কবজা করার আগেই, অথবা যে সমগ্র বিশ্বজগত পদানত হয়ে পরবে থ্যানোসের।

কিন্তু যে থ্যানোসকে নিয়ে এত হইহুল্লোড় মার্ভেলের কমিক্সের জগতে বেশ কিছু চরিত্র কিন্তু একাই হারিয়ে দিতে পারেন টাইটান গ্রহে জন্ম নেয়া থ্যানোসকে। কিন্তু এসব চরিত্রদের কাউকেই দেখা যাবে না “অ্যাভেঞ্জারসঃ ইনফিনিটি ওয়ার” চলচ্চিত্রে। তাই সুপারহিরোদের একতাই যে একমাত্র ভরসা। এবার দেখে নেয়া থ্যানোসকে হারানোর ক্ষমতাসম্পন্ন ছয়টি চরিত্রকে-

ডরমামু

ডরমামুঃ ডক্টর স্ট্রেঞ্জের সেই ভয়াবহ ভিলেইন ডরমামু নিশ্চয়ই এখনো হারিয়ে যায় নি দর্শকদের মন থেকে। ডক্টর স্ট্রেঞ্জের প্রধান শত্রু ডরমামু এতটাই শক্তিশালী যে সুবিধামত পেলে এক তুড়িতেই ধ্বংস করে ফেলতে পারেন থ্যানোসকে। অমর এই প্রাচীন শক্তিধর চরিত্রটির ক্ষমতার উৎস রহস্যময় জাদুর শক্তি। ডক্টর স্ট্রেঞ্জকেও তাই যে চালাকির আশ্রয় নিতে হয়েছিল ডরমামুকে পৃথিবী দখলের পাঁয়তারা থেকে আটকাতে। “লর্ড অফ ক্যাওয়াস”, “লর্ড অফ ডার্কনেস” ডরমামুর ক্ষমতা যেন দেবতাদের সমান, এমনকি নতুন জীবন সৃষ্টি করতে পারেন তিনি।

লিজিয়ন

লিজিয়নঃ এক্স ম্যানের প্রফেসর এক্স এর ছেলে ডেভিড হ্যালার আকা লিজিয়নকে বলা হয় সবচেয়ে ভয়ংকর মিউট্যান্ট। টেলিপ্যাথি ক্ষমতার পাশাপাশি লিজিয়ন বর্তমানকে নিজ ইচ্ছামত পরিবর্তন করতে পারেন, সময়ভ্রমণ ও তার কাছে বাম হাতের খেলা। ডেভিডের সবচেয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার অসংখ্য ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি ব্যক্তিত্ব তাকে নতুন নতুন সুপারপাওয়ারের ক্ষমতা দেয়। এ সব ক্ষমতা ব্যবহার করে থ্যানোসকে হারানো যে লিজিয়নের জন্যে বেশ সহজ তা বলার অপেক্ষাই রাখে না। টোয়েন্টি ফক্স সেঞ্চুরির কাছে এক্স ম্যানের চলচ্চিত্রের সত্ত্ব থাকায় মার্ভেল সিনেমাটির ইউনিভার্সে অন্যান্য মিউট্যান্ট দের মত দেখা যায় নি লিজিয়নকেও।

স্কুইরেল গার্ল

স্কুইরেল গার্লঃ স্কুইরেল গার্ল বর্তমান মার্ভেল কমিক্সের অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র। কাঠবেড়ালের সাথে কথা বলতে পারা এ চরিত্রটিকে আপাতদৃষ্টিতে অতটা শক্তিশালী মনে না হলেও ডক্টর ডুম, উলভারিনের মত চরিত্রকে খুব সহজেই হারিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা ডোরিন অ্যালিন গ্রীণ। এমনকি কমিক্সে থ্যানোসও তার সামনে দাড়াতে পারে নি। কাঠবেড়ালের সাথে যোগাযোগের ক্ষমতা তাকে দিয়েছে লড়াইয়ে একেবারেই অন্যরকম ভাবে পরিকল্পনার সুযোগ। এই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বাঘা বাঘা সব চরিত্রকে অনেকটা অপ্রস্তুত করেই হারিয়ে দেন স্কুইরেল গার্ল।

মিস্ট্রেস ডেথ

মিস্ট্রেস ডেথঃ মার্ভেলের জগতে মৃত্যুর আরেক নাম যেন “মিস্ট্রেস ডেথ”। যে কাউকে যে কোন সময়ে হত্যার পাশাপাশি মৃতকে পুনর্জীবন দানের ক্ষমতাও রয়েছে তার। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না, থ্যানোসকে হারানোটাও তার জন্যে কঠিন কোন বিষয় নয়। যদিও থ্যানোসের সাথে তার গল্পটাও বেশ মজার। ছোটবেলা থেকে অদ্ভুত প্রকৃতির থ্যানোস পূজা করতেন মিস্ট্রেস ডেথকে। একটা সময়ে ভালবাসতেও শুরু করেন তাকে। থ্যানোসের ভালবাসা দেখে তাতে সাড়াও দেন এক সময় মিস্ট্রেস ডেথ। একবার তো থ্যানোসকে মৃত থেকে জীবিতও করেছিলেন তিনি। সাবেক এই প্রেমিককে তিনি হত্যা করবেন কিনা সেটা নিয়েও বিতর্ক চলছে কমিক্স ভক্তদের মধ্যে। থ্যানোসের পাশাপাশি মিস্ট্রেস ডেথের এক সময় প্রেমিক ছিলেন আরেক জনপ্রিয় মার্ভেল সুপারহিরো ডেডপুল।

ফ্র্যাংকলিন রিচার্ডস

ফ্র্যাংকলিন রিচার্ডসঃ ফ্যান্টাস্টিক ফোরের প্রধান দুই চরিত্র রীড রিচার্ডস আকা ডক্টর ফ্যান্টাস্টিক ও সুজান স্টোর্ম আকা ইনভিজিবল ওম্যানের সন্তার ফ্র্যাংকলিন রিচার্ডস কে বলা হয় সর্বকালের অন্যতম শক্তিশালী মিউট্যান্ট। বাল্যকাল থেকেই এই ক্ষমতার পুরোটুকুই বিকশিত হতে থাকে তার মধ্যে। বর্তমান বাস্তবতাকে পরিবর্তনের পাশাপাশি ফ্র্যাংকলিন যে অমর। ছোট্ট এ বালক এতটাই শক্তিশালী যে একবার তো নিজের পকেটের মধ্যে সৃষ্টি করেছিলেন সম্পূর্ণ একটি বিশ্বজগৎ। শুধুমাত্র চিন্তাশক্তির সাহায্যেই থ্যানোসকে বিশ্বজগতের বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে পারেন ফ্র্যাংকলিন। সত্ত্বঘটিত জটিলতায় আপাতত এ চরিত্রটিকেও মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সে দেখার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

জিন গ্রে

জিন গ্রেঃ পাঁড় কমিক্স ভক্তদের পাশাপাশি সাধারণ দর্শকদের কাছেও জীন গ্রে একটি পরিচিত নাম। এক্স মেন সিরিজে তার ক্ষমতাকে কবজা করতে বারবার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে দেখা ম্যাগনেটোকে। এমনকি এক্সমেনের অন্যতম ভয়ংকর শত্রু প্রবল প্রভাবশালী অ্যাপোক্যালিপ্সকেও হার মানতে দেখা গেছে জীন গ্রের কাছে। ফিনিক্স ফোর্সের অধিকারী জীন গ্রে কমিক্সে আরো অনেক বেশ শক্তিশালী। নিজেকেও জীবিত করতে পারার ক্ষমতা তাকে দিয়েছে অনন্য শক্তি। ফিনিক্স ফোর্সের পাশাপাশি তার মহাজাগতিক শক্তির সাথে সম্পর্কের জোড়ে থ্যানোসকে হারাতে পারেন জীন।

কিন্তু এসব তো শুধু থ্যানোসকে হারানোর গল্প। ছয়টি ইনফিনিটি স্টোন সহ থ্যানোস অনেক বেশি শক্তিশালী, অনেক বেশি ভয়ংকর। এ স্টোনগুলো কোনভাবে কবজা করে ফেললে থ্যানোসকে একা হারানো এক কথায় অসম্ভব।