সরু বাঁশের মত দেখতে যেই মূর্তা গাছ সেখানেই লুকিয়ে শীতল পাটির উপাদান। ধাপে ধাপে তৈরী হয় শীতল পাটি। যেই পাটি আজ গৌরবের স্নারক বাংলাদেশের জন্য। স্বীকৃতি মিলেছে তার, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে, বিশ্বের দরবারে।
বাংলাদেশের বাউল গান, জামদানী শাড়ি আর মঙ্গল শোভাযাত্রা। এরপর শীতল পাটি। সবটাই আজ এক কাতারে। এই শীতল পাটি নিয়ে চলছে প্রদর্শনী, জাতীয় জাদুঘরে। রয়েছে সরাসরি বুনন দেখার সুযোগ।
কীভাবে তৈরি হয় শীতল পাটি? চলুন জেনে নিই-
মুর্তা গাছের বাকল সংগৃহীত হয় শুরুতে, এরপর চলে সেটি কেটে পাটির জন্য প্রস্তুত করণ।
এরপর পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় মুর্তার কান্ড।
এরপর একে চিরে ফেলা হয়। ভেতর থেকে কান্ডের সাদা ‘বুকা’ অংশটিকে ফেলে দেয়া হয়।
যিনি শীতল পাটি তোইরী করেন তাকে বলা হয় পাটিয়াল। মুর্তার ছাল থেকে সব চেয়ে সরু ও পাতলা বেতী তৈরি করা হয়। বেতী যত পাতলা ও সরু হবে পাটি তত নরম হবে।
এরপর একগুচ্ছ বেতী ভাতের মাড়, আমড়া ও জারুল গাছের পাতা মিশিয়ে সিদ্ধ করা হয়। যদি চাই রঙ্গিন নকশাদার পাটি তবে সেখানেই মিশিয়ে দেয়া হয় রঙ
একজন দক্ষ কারিগর একটি মুর্তা থেকে ১২টি পর্যন্ত সরু বেত তৈরি করতে পারেন।
এরপর সেই বেতী থেকেই চলে বুনন, সবশেষে বাজারজাত করণ।
বুননে থাকে নানা গল্প, শিল্পীর মনের গল্প।
যেই শীতল পাটি আজ বিশ্বের দরবারে বাংলার সংস্কৃতির প্রতীক সেটির তৈরির মূল আবাস কিন্তু সিলেটের সুনামগঞ্জে। তবে এই মুহুর্তে জাতীয় জাদুঘরে নলিনীকান্ত ভট্টাশালী গ্যালারীতে দেখা পাবেন নানা রকম নকশার শীতল পাটি। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মাঝে দেখে ফেলতে ভুল করবেন না।
ছবি- জাতীয় জাদুঘরের প্রদর্শনী থেকে সংগৃহীত।