নীরবতা ভঙ্গকারীরা টাইমের বর্ষসেরা ব্যক্তি

গত দুই মাসে লাখ লাখ নারী #me too হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তাদের নিজেরদের জীবনে ঘটা যৌন নিপীড়নের কথা প্রকাশ করে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের সেই প্রতিবাদ বর্তমানে বৈশ্বিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। প্রতিবাদ জানানেত সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ছেড়ে নারীরা নেমে এসেছেন রাস্তায়।

এই #me too হ্যাশট্যাগের ব্যবহার করে নীরবতা ভাঙ্গার মধ্য দিয়ে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন সৃষ্টিকারী নারীদের ‘পার্সন অব দ্যি ইয়ার’ সম্মাননায় ভূষিত করেছে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন।

টাইম ম্যাগাজিন জানিয়েছে, হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে ঘটনার অংশ বিশেষ আমাদের সামনে এসেছে, পুরো চিত্র আরও ব্যাপক ও বিস্তৃত। ম্যাগাজিনটির সম্পাদত এওয়ার্ড ফেলসেনথাল বলেন, “বিগত কয়েক দশকের মধ্যে এ সামাজিক আন্দোলনটিই সবচেয়ে দ্রুত গতিতে ছড়িয়েছে।”

সাধারণত একজন ব্যক্তিকে পার্সন অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়। তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও এক সঙ্গে অনেক মানুষকে এ খেতাবে ভূষিত করা হয়েছিল-২০১১ সালে আরব বন্তসের বিক্ষোভকারীদের এবং ২০১৪ সালে ইবোলা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকারীদের এ খেতাবে ভূষিত করা হয়েছিল।

প্রতিবাদের ঝড় ওঠে বিশ্বের সবখানে

গত অক্টোবরে হলিউডের প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিনের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার অভিযোগ উঠার মধ্য দিয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদ স্বরূপ মার্কিন অভিনেত্রী এলিসা মিলানো একটি টুইট করেন: “আপনি যদি কখনও যৌন হয়রানি বা সহিংসতার শিকার হন, তবে ‘me too’ লিখে জবাব টুইটের জবাব দিন।”

এলিসা মেলানোর টুইট

খুব অল্প সময়ে মধ্য টুইটটিতে সংগতি জ্ঞাপন করতে শুরু করে হাজার হাজার নিপীড়িত নারী। টুইটারের একজন মুখপাত্র জানান, তার এ টুইটের পর ২৪ঘণ্টার মধ্যে ‘me too’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে প্রায় ৫ লাখ টুইট প্রকাশিত হয়। সেই হ্যাশ ট্যাগে একের পর এক উন্মোচিত হচ্ছিল যৌন সহিংসতার ভয়াবহ সব ঘটনা।

শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নয়, যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে রাস্তায়ও নেমে পড়েন নারীরা

এরপরের ঘটনা কমবেশি সবারই জানা। প্রতিবাদের এমন বহিঃপ্রকাশ শুধু টুইটাইরে সীমাবদ্ধ থাকলো না, ফেসবুকসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন মূল ধারা গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। ‘me too’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে লাখ লাখ নারী জানিয়েছেন তাদের জীবনের সবচেয়ে নোংরা ও পীড়াদায়ক ঘটনাগুলো। শুধু অনলাইনে নয় এ হ্যাশট্যাগকে উপজীব্য করে রাস্তায় নেমে এসেছেন নারীরা।