কারা থাকছে এবারের অ্যাভেঞ্জার্সে?

ইনফিনিটি ওয়ারের ট্রেইলার এসেছে কয়েক ঘণ্টা আগে। অনেক বছর ধরে মারভেল কমিক-প্রেমিরা এই সিনেমার ট্রেইলারের জন্য অপেক্ষায় ছিলো। কেননা মারভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের ১৯তম এই ফিল্মেই একসাথে দেখা যাবে অ্যাভেঞ্জার্সের সবাইকে, সাথে থাকবে ডক্টর স্ট্রেইঞ্জ আর গার্ডিয়ানস অব দ্য গ্যালাক্সির পুরো দলটিও। সবাই এক হয়েছে একটি উদ্দেশ্যে। রুখতে হবে সুপারভিলেন থ্যানোসকে।

কে এই বিষম সুপার ভিলেন থ্যানোস?

থ্যানোসঃ

সুপারভিলেন থ্যানোসের শক্তির কূল-কিনার নেই! মার্ভেল ইউনিভার্সের এই গড টেলিকিনেসিস, টেলিপ্যাথি, ম্যাটার ম্যানিপুলেশনের মতো আরো অনেক ক্ষমতারও অধিকারী। এবারই প্রথম থ্যানোসকে স্বমহিমায় দর্শকরা দেখতে পাবেন বড়পর্দায়। ধারণা করা হচ্ছে রোনান ও লোকিকে সাথে নিয়ে এবার পৃথিবী ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠতে দেখা যাবে এই অমিত শক্তিধর সুপারভিলেনকে।

আর তাই এই সিনেমাটি হতে যাচ্ছে মার্ভেলের সব সুপারহিরোদের গেট টুগেদার পার্টি। এত এত সুপারহিরোদের ভিড়ে সবার কথা মনে নাই থাকতে পারে দর্শকদের।  তাই ইনফিনিটি ওয়ারে দেখা পেতে যাওয়া সুপারহিরোদের সবাইকে নিয়ে আজকের এই লেখা।

ক্যাপ্টেন আমেরিকাঃ

প্রথম অ্যাভেঞ্জার ক্যাপ্টেন আমেরিকা

স্টিভ রজার্স।  প্রথম অ্যাভেঞ্জারও তিনি। এখন অবধি অ্যাভেঞ্জার্সের নেতৃত্ব তো দিয়েছেনই, ছিলেন এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ময়দানেও। মোকাবেলা করেছেন হাইড্রার মতো ভয়ংকর অর্গানাইজেশনকেও। অভিজ্ঞতা আর নেতৃত্বের সক্ষমতায় তার বিকল্প খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সুপার সোলজার সিরাম ও ভিটা-রে ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে তাকে সাধারণ এক মানুষ থেকে রূপান্তরিত করা হয়েছিলো সুপারহিরোতে। তবে অন্য সব সুপারহিরোর মত তার কোন অত্যাশ্চর্য ক্ষমতা নেই। তবে শক্তি, ধৈর্য, গতি, হিলিং ক্ষমতা এসবকিছু নিয়েই ক্যাপ্টেন আমেরিকা।

আয়রন ম্যানঃ

আয়রন ম্যান

মার্ভেল ইউনিভার্সের সবচেয়ে চার্মিং চরিত্র এই আয়রন ম্যান। আপাতদৃষ্টিতে তিনি শুধুই টনি স্টার্ক, বিলিওনিয়ার প্লেবয়। কিন্তু তিনি আবার মানবপ্রেমিও। কিন্তু এতটুকুতেই তার পরিচয় সীমাবদ্ধ থাকেনি। নিজের অসাধারণ ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতার দ্বারা তিনি তৈরি করেন আয়রন স্যুট। এই স্যুটই তাকে সুপার হিউম্যানে পরিণত করে। এই স্যুটের সাহায্যে তিনি উড়তে পারেন। শুধু তাই নয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এই স্যুট নিয়েই তিনি মোকাবেলা করেন সব শত্রুদের।

হাল্কঃ

হাল্ক

বৈজ্ঞানিক ব্রুস ব্যানার গামা রেডিয়েশন ব্লাস্টে রূপান্তরিত হন হাল্কে। কিন্তু এই রূপান্তর এমনি এমনি হয় না। ভয়, রাগ, দুশ্চিন্তা এধরনের অনুভূতি গুলো ব্রুস ব্যানারের মধ্যে যখন খুব প্রখর হয়ে ওঠে, তখনিই সে পরিণত হয় হাল্কে। অসম্ভব শারীরিক শক্তি, দ্রুততা ও হিলিং পাওয়ার তার মূল ক্ষমতা। এছাড়াও বিশাল বিশাল লাফ দেয়ার ক্ষমতা থাকায় তিনি উড়তে পারা অন্য সব সুপারহিরোদের কাতারেই চলে এসেছেন। এছাড়াও পৃথিবীর কোন রোগ ও ভাইরাস তাকে অক্রমণ করতে পারে না। অক্সিজেন, খাবার, পানি, ঘুম এসবকিছু ছাড়াই তিনি টিকে থাকতে পারেন যেকোনো পরিস্থিতিতে। এমনকি পানির নিচে নিঃশ্বাসও নিতে পারেন তিনি।

থরঃ

থর

পৃথিবীর সব সুপারহিরোদের মধ্যে থর হচ্ছেন সেই জন যিনি আসলে একজন গড।  নর্স মিথোলজি থেকে ধার করা এই চরিত্রটির মূল শক্তি তার হাতের হাতুড়িতে।  সান অব ওডিন নামে খ্যাত থর নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন বজ্রপাতও।  শুধু তাই নয়, যুদ্ধবিদ্যায়ও তার আছে অসাধারণ পারদর্শিতা।

হকআইঃ

হক-আই

ক্লিন্ট বার্টন বা হকআই এর কোন সুপার পাওয়ার না থাকলেও প্রচন্ড অধ্যবসায় দ্বারা ধনুর্বিদ্যায় নিজেকে অসম্ভব পারদর্শী করে গড়ে তোলেন তিনি। লক্ষ্যভেদে হকআই অনন্য। এছাড়াও ফেন্সিং ও অ্যাক্রোব্যাটিক্সেও তিনি কোন সুপারহিরোর চেয়ে কম নন।

স্পাইডার ম্যানঃ

স্পাইডারম্যান

রেডিও অ্যাকটিভ মাকড়শার কামড়ে বদলে যায় পিটার পার্কারের স্বাভাবিক জীবন। টিনেজ এই সুপারহিরোর বয়স কম হলেও তার ক্ষমতা কিন্তু কম নয় একদমই। প্রচন্ড শারীরিক শক্তি, তৎক্ষণাৎ রিফ্লেক্স তার সবচেয়ে বড় সক্ষমতা। এছাড়াও স্পাইডার সেন্সের মাধ্যমে আশপাশের যেকোনো বিপদ সম্পর্কে আগেভাগেই টের পেয়ে যায় সে। তরতর করে বেয়ে উঠতে পারে যেকোনো সারফেস, শক্তিশালী জাল দিয়ে প্রতিহত করে শত্রুদের।

স্কারলেট উইচঃ

স্কারলেট উইচ

ওয়ান্ডা ম্যাক্সিমফ বা স্কারলেট উইচ একজন মিউট্যান্ট। বাস্তবতাকে নিজের ইচ্ছামতো পরিবর্তন করতে পারেন তিনি। প্রতিপক্ষ সুপারহিরোদের জন্য বিভ্রম তৈরি করে বিভ্রান্ত করাই তার মূল কাজ।

ব্ল্যাক উইডোঃ

ব্ল্যাক উইডো

ব্ল্যাক উইডোরও কোনো সুপার পাওয়ার নেই। কিন্তু তার কমব্যাট স্কিল তাকে অনন্য করে তুলেছে এত এত সুপারহিরোর মাঝেও। কারাটে, জুডো, যুযুৎসু, বক্সিং, আইকিডো, নিনযুৎসু, কুংফু সবকিছুই তার জানা। তাছাড়া, পৃথিবীর অন্যতম সেরা এই স্পাই এর আলাদা সুনাম আছে এসপিওনাজ জগতে।

ফ্যালকনঃ

ফ্যালকন

স্যাম উইলসন শুধুই যে তার যান্ত্রিক পাখা নিয়ে উড়তে পারেন তাই নয়, তার আছে কিছু টেলিপ্যাথিক ক্ষমতাও।  তবে মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সে ফ্যালকনের টেলিপ্যাথিক ক্ষমতা দেখা যায়নি।  তবে, অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ফ্যালকন স্যুট নিয়ে শত্রু  মোকাবেলায় তার ধার কমে যায়নি তাতে এক বিন্দুও।

ব্ল্যাক প্যানথারঃ

ব্ল্যাক প্যানথার

ব্ল্যাক প্যানথারকে মাত্রই মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সে নিয়ে আসা হয়েছে। সামনে এই চরিত্রের সম্পূর্ণ নতুন সিনেমাও আসছে। শারীরিক শক্তি, গতি, রিফ্লেক্স, প্যানথার সেন্সের মাধ্যমে বিপদ আচ করতে পারা এবং অসাধারণ কমব্যাট স্কিল- এসবকিছু মিলেই তৈরি হয়েছে ব্ল্যাক প্যানথার চরিত্রটি।

অ্যান্ট ম্যানঃ

অ্যান্ট ম্যান

অন্যসব সুপারহিরোদের ভিড়ে অ্যান্ট-ম্যান একদমই আলাদা। কোনো রকম সুপার পাওয়ার এর অধিকারী নন স্কট ল্যাং।  ‘পিম পার্টিকেল’ ব্যবহার করে তিনি নিজেকে পিঁপড়ার মতো ছোট করে ফেলতে পারেন। পরবর্তীতে নিজের আকৃতিকে যেকোনো রূপে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা অর্জন করেন তিনি।

ওয়ার মেশিনঃ

ওয়ার মেশিন

জেমস রোডস। তিনি টনি স্টার্কের বহুদিনের বন্ধু এবং US Air Force এর একজন সোলজার। এমনিতে তিনি কোনো সুপার পাওয়ারের অধিকারী নন। কিন্তু টনি স্টার্কের তৈরি করা স্যুটের বদৌলতে তিনিও হয়ে উঠেন আরেক সুপারহিরো ওয়ার মেশিন।

স্টার লর্ডঃ

স্টার লর্ড

পিটার জেসন কুইল তার আসল নাম। কিন্তু স্টার লর্ড নামেই সবাই চেনে তাকে। মহাকাশেই তার সব আনাগোনা। নিজের স্পেশাল স্যুটের মাধ্যমে মহাকাশে সহজেই বিচরণ করতে পারেন তিনি। তাছাড়া হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাটেও তিনি অসম্ভব দক্ষ। এবারই প্রথম অ্যাভেঞ্জার্সদের সাথে একই পর্দায় দেখা যাবে স্টার লর্ডকেও।

উইন্টার সোলজারঃ

উইন্টার সোলজার

বাকি বার্নস খুবই স্বাভাবিক একজন মানুষ ছিলেন। কিন্তু ইনফিনিটি ফরমুলা তার শরীরে ইনজেক্ট করা হলে তার মাঝে কিছু শক্তি প্রকাশ পায়। শারীরিক দক্ষতা তো বাড়েই, সেই সাথে হিলিং পাওয়ারও অর্জন করেন তিনি। গতি ও রিফ্লেক্সও তার আরেক শক্তি।

ডক্টর স্ট্রেঞ্জঃ

ডক্টর স্ট্রেঞ্জ

স্টিফেন স্ট্রেঞ্জ নামের এক নিউরোসার্জন এর স্বাভাবিক জীবন হঠাৎ করেই পালটে যায় গাড়ি দুর্ঘটনায়। তারপরই এনসিয়েন্ট ওয়ান নামের একজন জাদুকরের সাহায্যে ডক্টর স্ট্রেইঞ্জ হয়ে উঠেন তিনি। ক্লোক অব লেভিটেশনের সাহায্যে তিনি উড়তে পারেন, ভিন্ন ভিন্ন স্পেলের মাধ্যমে টাইম ও স্পেস ম্যানুপুলেশনের মাধ্যমে মোকাবেলা করেন শত্রুদের। এনার্জি এবং ম্যাটারকে নিজের ইচ্ছামতো ব্যবহার করতে পারেন তিনি। অ্যাভেঞ্জার্সদের গল্পে এবার জাদুটোনা নিয়ে আসবেন এই ডক্টর।

ভিশনঃ

ভিশন

ভিশনের সাথে আমরা অনেক আগে থেকেই পরিচিত। আয়রন স্যুট নিয়ন্ত্রণের জন্য যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স জারভিস সবসময় সাহায্য করতো টনি স্টার্ককে, তার মানবাকৃতির রূপই হচ্ছে ভিশন। সুপার হিউমেন সেন্স ও স্ট্যামিনা তার মূল ক্ষমতা। এছাড়াও অসাধারণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাও আছে তার।

গামোরাঃ

গামোরা

গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সির গামোরা-কেও দেখা যাবে এবারের ইনফিনিটি ওয়ারে। থ্যানোসের দত্তক নেয়া সন্তান এই গামোরা। নিখুঁত কমব্যাট স্কিল, হিলিং পাওয়ার ও রিফ্লেক্স তার মূল শক্তি।

নেবুলাঃ

নেবুলা

GOTG এর এই চরিত্রটিও থাকছে এবারের অ্যাভেঞ্জার্সে। থ্যানোসের আরেক দত্তক নেয়া মেয়ে নেবুলা অস্ত্র হাতে যেমন পারদর্শী, অস্ত্র ছাড়া তার কমব্যাট স্কিলও কোন অংশে কম নয়।

রকেট র‍্যাকুনঃ

রকেট র‍্যাকুন

প্রচন্ড মাথা গরম, বদরাগী কিন্তু মজাদার একটি চরিত্র রকেট। আসলে সে একটি র‍্যাকুন, কিন্তু যুদ্ধবিদ্যায় কোন অংশে কম পারদর্শী নয় বাকিদের থেকে। নিজের চেয়েও লম্বায় বড় অস্ত্র সামলাতেও এক বিন্দু পিছপা হয় না সে।

গ্রুটঃ

ছোট্ট গ্রুট

গ্রুট নামের এই চরিত্রটি মন কেড়ে নিয়েছিলো সবার। এবার অ্যাভেঞ্জার্সেও দেখা যাবে গ্রুট কে। গাছ ও লতাপাতা নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আক্রমণ করতে পারে শত্রুকে। আগুনও তাকে ধ্বংস করতে পারে না। নিজেক রিজেনারেটও করতে পারে গ্রুট।

এই সবকিছু নিয়েই আসছে এবারের অ্যাভেঞ্জার্স। ড্রাক্স দ্য ডেস্ট্রয়ার, মানটিস, দ্য কালেক্টর, মারিয়া হিল, লোকি এদেরকেও দেখতে পাবেন। আর এবার দেখে নিন গরম গরম এই ট্রেইলারটি।