দেখতে চাইলে নদীর গল্প

এদেশের অঙ্গে অঙ্গে যেমন নদীর মায়া জড়ানো, যে নদীর গতিপথ ঠিক করে দেয় জীবন প্রকৃতি, সেই নদীকে নিয়ে তৈরি হয়েছে কত না গান-কবিতা-ছবি। রং-তুলির ক্যানভাসে নদীর চিত্রকল্প রচিত হয়েছে আগেও। বহমান এই স্রোতধারায় আবিষ্ট হয়ে আরও একজন শিল্পীর হাতে উঠে এসেছে নদীর গল্পগুলো। সে গল্প খেয়া পারাপারের, শীতের কুয়াশার বা বর্ষার গল্প। সম্প্রতি গ্যালারী কায়াতে এই গল্পগুলো নিয়েই জলরংয়ে নিজের গল্প সাজিয়েছেন শিল্পী শাহনূর মামুন। যদিও গল্পের শেষ নদীতেই নয়, বরং দেখার সুযোগ মেলে আরও অনেক কিছুই। হলুদ সোনালু অথবা লাল কৃষ্ণচূড়া দেখা পেতে পারেন এখানেই। কিংবা জলরংয়ে আঁকা দুর্গা প্রতিমাকেও।
ইম্প্রেশনিস্টদের সেই যুগান্তকারী ধারা বদলের শত বছর পেরিয়ে গেছে কবেই। তবে আজও সেই ধারায় অণুপ্রাণিত শিল্পী শাহনূর। ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় যার বেড়ে ওঠা। এই নদের টানেই এঁকেছেন অনেক ছবি। যেখানে কেবল গল্প বলেছেন জলের, প্রতিনিয়ত।
প্রদর্শনীতে রয়েছে এমন কিছু নদীর দৃশ্যকল্পগুলো ঠিক এমন-

শীতকালের আঁটিবাজার ব্রীজ। নিষ্প্রাণ শীতের সকাল প্রাণ পেয়েছে শিল্পীর রঙ তুলিতে

সুন্দরবনের ভেতরে আঁকাবাঁকা বয়ে চলেছে কত শত নদী। সেই নদীর বুকে যাত্রা করে মৌয়ালরা। সেখানে নৌকা কেবল ভ্রমণ অনুষঙ্গ তেমনি নৌকাই সেখানে ঘর-বাড়ি। সুন্দরবনের এমনই কোন এক বাঁকের ছবি।

বাদা বনের বাঁকে

চিত্রা নদীর গল্প শোনা হয়েছে বহুবার। শিল্পী পৌঁছে গিয়েছিলেন সেখানেও। ক্যানভাসে ফ্রেমবন্দি করেছেন খেয়া পারাপারের একটি মুহূর্তকে। যদি না হয়ে থাকে চিত্রা নদী দেখা, তবে দেখে নিন এই সুযোগে।

চিত্রা নদীর খেয়া পার

শিল্পীর নিজের পরিমণ্ডল এই ব্রহ্মপুত্র নদকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল। শৈশবের সেই মায়া ফুরোবার নয়। সেই মায়ার আবেশেই এঁকেছেন ব্রহ্মপুত্রের খেয়া পারাপারের ছবি।

সতত যে নদ শিল্পীর মনে, ব্রহ্মপুত্র

এই নাগরিক ঢাকা শহর থেকে সামান্য দূরেই দেখা মিলবে তুরাগ নদীর। সেই তুরাগ নদীর পাড়ের কোন এক মুহূর্তের ঠাঁই হয়েছে ক্যানভাসে।

শহর ঢাকার সামান্য দূরের তুরাগ

নদীমাতৃক দেশে শুধুই নদীর ছবি রয়েছে এমনটি ভাবলে ভুল করবেন। গল্প শুনেছেন সিলেটের রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের? এই সেই সোয়াম্প ফরেস্ট-

রাতারগুলের জল-জঙ্গলের কাব্য

অথবা পাহাড়ে ঘেরা কাপ্তাই হ্রদ?

পাহাড়ে জলের চলন

যদি দেখতে চান এই জল রংয়ে আঁকা গল্পগুলো তবে একটু সময় রাখুন গ্যালারী কায়ায় যাবার। প্রদর্শনী চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত, সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা।