আত্নপরিচয়ের সংকট একটিমাত্র পরিচয়ে: ড. আনিসুজ্জামান

বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, মানুষ মাত্রেরই একাধিক পরিচয় থাকে। প্রসঙ্গক্রমে সে কোনো এক পরিচয়কে তুলে ধরে বা জোর দেয়, কিন্তু সেটিই তার একমাত্র পরিচয় নয়, আবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় নাও হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আত্নপরিচয়ের বহুত্ব উত্তেজনা বা সংকটের কারণ হতে পারে যদি আমরা একটিমাত্র পরিচয় সম্বল করতে চাই, অথবা পরিচয়-বর্গগুলোকে গুলিয়ে ফেলি। উনিশ শতকে বাংলার মুসলমান তেমনি সংকটে পড়েছিল তার বাঙালি সত্তা ও মুসলমান সত্তা নিয়ে, যদিও তার কোনো কারণ ছিল না। হিন্দু বললেই যেমন সে পরিচয় পরিপূর্ণতা লাভ করতো না, তার বর্ণ, অঞ্চল, পেশা না বললে সম্পূর্ণ হতো না; তেমনি বাংলার মুসলমান সমাজেও নানারকম ভাগ ছিল।’

রবিবার জাতীয় যাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলার মুসলমানের পরিচয়-বৈচিত্র: অষ্টাদশ শতাব্দী অবধি’ শীর্ষক জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক গুণিজন বক্তৃতার তৃতীয় আসরে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

ড. আনিসুজ্জামান আরও বলেন, মনে রাখতে হবে যে, ‘বাসস্থান ও বৈবাহিক মর্যাদার মতো ধর্মীয় পরিচয় পরিবর্তনশীল, তবে উদ্ভব ও ভাষাগত পরিচয় অপরির্তনীয়। আমরা সে-পরিচয় ব্যবহার করি, তা নিয়ে অনেক কথা হতে পারে, তবে এটুকু বলা দরকার যে, পরিচয়ের বহুত্ব কিছুইতেই অবজ্ঞেয় নয়।’

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. আহরার আহমদ, এবং অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক স্মরণে আয়োজিত এ ধারাবাহিক বক্তৃতামালার প্রথম আসরে বক্তব্য রেখেছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান এবং দ্বিতীয় আসরে বক্তব্য রেখেছিলেন বামপন্থি তাত্ত্বিক বদরুদ্দীন উমর। ধারাবাহিক এ বক্তৃতামালার উদ্যোক্তা জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডশেন।