চারমিনারের তোপসে

শার্লক হোমস-ওয়াটসন কিংবা ব্যোমকেশ-অজিতদের সিনেমা-সিরিজের বাজার সর্বদাই সরগরম। বাংলা বিশেষত ওপার বাংলায় শুধু বইয়ের পাতায় নয়, সিনেমার পর্দাতেও ধুন্ধুমার মগজাস্ত্র খাটিয়ে চলেছেন সেই কিরীটি থেকে আজকের শবরেরাও। সঙ্গী হচ্ছেন অজিত, তোপসে আর নন্দুরা। যদিও এবারে আসছে এক বিশাল টুইস্ট। সত্যজিতের ফেলুদার চরিত্রে আগমন ঘটছে সাবেক তোপসের। সেটি ঘটছে এবার বাংলাদেশের ছোট পর্দায়। আসছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ফেলুদা হয়ে।

কাগজ-কলমে ফেলুদার আগমন ১৯৬৫ সালে। সন্দেশ পত্রিকায়। সত্যজিত রায়ের হাত ধরে। গল্পগুলো সব তোপসেই বলত। তাই প্রদোষ চন্দ্র মিত্তিরকে সবাই চেনে ‘ফেলুদা’ নামেই। পর্দায় প্রথম ফেলুদা আর তোপসের সাথে দর্শকের দেখা ১৯৭৪ সালে। সেবার তোপসে চরিত্রে ছিলেন সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়। এরপর ফেলুদার গল্প নিয়ে মেতে উঠে ছোট পর্দার দর্শক। সৌমিত্রের বদলে সব্যসাচী, আর সাথে তোপসে ছিলেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। বড়বেলায় ব্যোমকেশের সাথে সহযোগী অজিত চরিত্রে যার সাথে দেখা করিয়ে দিয়েছেন অঞ্জন দত্ত। তবে ছোট্ট তোপসের বড় ‘ফেলুদা’ হবার গল্প এই প্রথম। এবং সেটি বিশ্ব সংসারে এক অভূতপূর্ব ঘটনা বটে। কেননা কোন জেমস বন্ডের ভিলেন আর বন্ড হননি; এমনকী কোন ওয়াটসনও হননি শার্লক।

পরমব্রতর তোপসে রূপে প্রথম আবির্ভাব ছিল ২০০৩ এ। বোম্বাইয়ের বোম্বেটে সিনেমায়। মাত্র টালিগঞ্জের পাড়ায় যাত্রা শুরু হয়েছে। এরপর সর্বশেষ তাকে দেখা গেল টিনোটেরেটোর যিশু সিনেমায়। ২০০৮ সালে। মাঝে ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সেকালের তোপসেকে এখনও কেউ স্মৃতির আড়াল করেনি। এর মাঝেই সেই তোপসে বড় হয়েছেন। এবার তাই চারমিনার  ধরিয়ে আলস্যের আড়মোড়া ভেঙ্গেছেন তিনি।

প্রিয় দাদার কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ তোপসে। ফেলুদাকে তার এত ভালো লাগে বলেই না, তার সাথে ছুটে বেড়ানো ভারতবর্ষ জুড়ে। এমনকি পরমব্রত নিজেও এই স্বপ্নের চরিত্রটিকে নিয়ে পথ হেঁটেছেন এতকাল। দু’দিন আগে টিজার মুক্তি পাওয়ার পর সে খবর নিজের ফেসবুকে জানিয়েছেন বেশ ঘটা করেই। তাই  বলতে হয় প্রথমবারের মত তোপসের ফেলুদা হয়ে আগমনে আপ্লুত স্বয়ং ফেলু মিত্তির নিজেই। সাল ২০১৭ সত্যিই সবাইকে দেখা করিয়ে দিচ্ছে এই নতুন যাত্রার সাথে।

৫২ বছর পেরিয়ে অবশেষে পর্দার ছোট্ট তোপসেই হাজির হচ্ছেন বড় পর্দায়, বড় বেলার ফেলুদা হয়ে। চারমিনারে দু’টো টান।

আহ! ফেলুদা। এবার তোপসের ঠোঁটে দেখা মিলবে তার। চারমিনার থাকবে, ফেলু মিত্তিরের ঠোঁটেই।