আহা ইলিশ!

‘ইলিশ’ শব্দটি শুনলেই জিভে জল আসে বাঙালির৷ ভাজা, পাতুরি কিংবা ঝোলে; সর্ষে কিংবা দই-এমনকী বেগুন সহযোগে বাঙালির রসনা রাজ্যে ইলিশের রাজত্ব শত রূপে, শত স্বাদে৷

রূপালী সে শস্য এখন বাংলাদেশের ‘ভৌগলিক নির্দেশক’ (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) পণ্য হিসেবে পৌঁছবে বিশ্বের নানা দেশে। মৎস্য অধিদপ্তরের আবেদনে দেশের রসনা ঐতিহ্যের ধারক-বাহক জাতীয় মাছ ইলিশ জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর থেকে।

২০১৬ সালে মৎস্য অধিদপ্তর, জাতীয় মাছ ইলিশকে ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। নিবন্ধনের আবেদনে মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, ১৮২২ সাল থেকে ইলিশ বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও কৃষ্টির সঙ্গে জড়িয়ে আছে৷ অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও আমিষ জাতীয় খাদ্যে এ মাছের ভূমিকা রয়েছে৷

যার প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১ জুন সরকারি গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেট প্রকাশের পর আপত্তি উত্থাপনের জন্য দু’মাস সময় দেওয়া হলেও ইলিশ নিয়ে কোনো আপত্তি ওঠেনি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন শীঘ্রই সনদ ও এ সংক্রান্ত অন্য নথি মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ প্রথম৷ বিশ্বের মোট ৭৫ শতাংশ ইলিশ আহরিত হয় বাংলাদেশে৷ বাকি ১৫ শতাংশ মিয়ানমার, ৫ শতাংশ ভারত ও ৫ শতাংশ অন্যান্য দেশ থেকে আহরিত হয়। প্রতিবেশী ভারতে বাংলাদেশের ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এতদিন রপ্তানিতে বাংলাদেশি ইলিশের কোনো ব্র্যান্ডিং ছিল না যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে শনাক্তকরণের কোনো পদ্ধতিও ছিল না। এখন ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায়, নিবন্ধিত ব্র্যান্ড হিসেবে বিদেশে যাবে ইলিশ। ফলে বিদেশি ক্রেতারা সঠিক পণ্য শনাক্ত করতে পারবেন। বিদেশে আরও ভালো দাম পাওয়া যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশ মাছের অবদান প্রায় বাজার মূল্যে প্রায় ১৫ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। যা জিডিপির প্রায় ১%।

২০১৬ সালে জিআই পণ্য হিসেবে প্রথমবারের মতো জামদানিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর। এবারে সেই স্বীকৃতি পেল ইলিশ।

ছবি সৌজন্যে পাতুরি