আজ হুমায়ূনের মৃত্যুদিন? কোন হুমায়ূন? লেখক হুমায়ূন? নাকি আগুনের পরশমণির পরিচালক হুমায়ূন? আমজনতার জনপ্রিয় সব টিভি নাটকের ইতিহাসও সৃষ্টি করেছিলেন তিনিই। তবে আজ অন্য এক হুমায়ূনের গল্প বলি চলুন। যে হুমায়ূনের সৃষ্টিশীলতার কোন সীমানা ছিল না। গানের হুমায়ূন, গীতিকার হুমায়ূনকে আসলে ভুলেই যাই আমরা।
গীতিকার হিসেবে হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তাও এমন কিছু কম নয় কিন্তু। তাঁর হাতের ছোঁয়ায় গানগুলো যেন সুর দেবার আগেই হয়ে উঠেছিল প্রাণবন্ত। তার লেখনীতে গানের তালিকাও কিছু কম নয়। এমন বাদল মুখর মন খারাপ করা দিনে তবে হয়ে যাক হুমায়ূনের সৃষ্টি অনবদ্য কিছু গানের গল্প।
একটা ছিল সোনার কন্যা
বাংলাদেশের সিনেমার এক কালো সময়ে হুমায়ূন আহমেদ নির্মাণ করেন নিজের দ্বিতীয় সিনেমা। পর্দায় একই সাথে সময়ের জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা- জাহিদ হাসান সঙ্গে মাহফুজের ঠোঁট মিলিয়ে গান অথবা গ্রামের সরলা মেয়ের চরিত্রায়ণে শাওন। আচ্ছা বাদ দেই তাদের কথা, এই গানের কন্ঠে ছিলেন সুবীর নন্দী। এরপরেও আজও কারোর যদি ভুল করা কন্যার লাগি মন আনচান করে তবে খুঁজে ফেরে গানের গীতিকারকে। গীতিকার আর কেউ নন, হুমায়ূন আহমেদ নিজেই। এই প্রথম সিনেমার দর্শকের সাথে দেখা হয় গীতিকার হুমায়ূনের।
মাথায় পড়েছি সাদা ক্যাপ
সিনেমার শুরু এক রহস্য মানবের আচমকা প্রবেশ দিয়ে। সিনেমার নাম “দুই দুয়ারী”। গানটিতে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন রহস্য মানব চরিত্রের অভিনেতা রিয়াজ, কন্ঠ দিয়েছিলেন আগুন। শহরের কোন এক বিভ্রান্ত তরুণ তার এলোমেলো দিনে এই গান গুনগুনিয়ে চলতে পারে নিজের পথ, হাতে নিয়ে অচেনা শহরের ম্যাপ। যুগে যুগে হুমায়ূনের গানের কথায় পথ চলেছে, চলবে কত তরুণ।
ও আমার উড়াল পক্ষীরে
আবারো হুমায়ূনের লেখা গান, গেয়েছিলেন সুবীর নন্দী। সিনেমার নাম “চন্দ্রকথা”। সিনেমার এক ক্রান্তিলগ্নে চিত্রনায়ক ফেরদৌস চমৎকার ঠোঁট মিলিয়েছিলেন এই গানে। নিজের চতুর্থ সিনেমায় যথারীতি হুমায়ূনের প্রতিভার ঝলক দেখে দর্শক। নাটক অথবা সিনেমার পরিচালক, তার সাথে গানেরও রচয়িতা। সবার মনে জায়গা পেতে হুমায়ূনের অপেক্ষা করতে হয়নি।
যদি মন কাঁদে
শুধু বর্ষার আবেগই নয়, গানটি ছুঁয়ে যাবে আপনার পরাণের গহীনতম স্থানকে। প্রতিদিন, প্রতিক্ষণে। সেকরনেই হয়তো বেলা ফুরালে হুমায়ূনের জাদুকর পরিচয় মুখ্য হয়ে যায়। সিনেমা নয়, নাটকের জন্য লেখা হয়েছিল এই গান। মেহের আফরোজ শাওনের গলায় গানের আবেদনও বেড়েছে আরও কয়েক গুণ।
বাজে বংশী
সিনেমার নাম “ঘেটু পুত্র কমলা”। হাওর এলাকার বাউলদের গানের সাথে সাথে এ সিনেমায় হুমায়ূন আহমেদের নিজের লেখা এই গানটিও চরম জনপ্রিয়তা পায়। নিজের শেষ সিনেমায় শেষবারের মত হুমায়ূনের লেখা গানের পরিবেশনায় দর্শকের প্রথম পরিচয় হয় ঘটে “ঘেটু” নাচের সাথে।