সিনেমা হলে বাণিজ্যিক প্রদর্শণের জন্য মুক্তি এখনও অনিশ্চিত। কিন্তু ডুব এরই মধ্যে প্রদর্শিত হয়েছে মস্কো ও সাংহাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। মস্কো থেকে জিতে নিয়েছে কমেরসান্ত জুরি পুরস্কারও।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে দেখা না গেলেও প্রোডাকশনের সময় থেকেই তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ছবিটি। যে বিতর্কের শুরু সিনেমার বিষয়বস্তু বা সাবজেক্ট নিয়ে। প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আহমেদের পরিবার দাবি করছে তার জীবন নির্ভর সিনেমা যে ব্যপারে কারো অনুমতি নেওয়া হয়নি। আবার পরিচালক বলছেন এই সাদৃশ্য কাকতালমাত্র।
আসলেই কী আছে সিনেমার গল্পে? বাংলার দর্শক দেখেনি তবে সাংহাইয়ে প্রদর্শনীর পর সিনেমাটির রিভিউ প্রকাশ করেছে হলিউড রিপোর্টার এর মতো খ্যাতনামা সংবাদ মাধ্যম। সেখানে পাওয়া গেল কিছু স্পয়লার…
১. ডুবে প্রসিদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মাতা জাভেদ খান (ইরফান খান) তার বহুদিনের বিবাহিত স্ত্রী মায়া (রোকেয়া প্রাচী) এবং সন্তানদের ত্যাগ করে নতুন করে ঘর বাঁধবেন তার মেয়ের স্কুলফ্রেন্ডের সঙ্গে।
২. ডুব কোনো রহস্যমণ্ডিত গল্পগাথা নয়। শুধু আত্মাভিমান এবং অহং এর দংশনে কীভাবে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় একটি মধ্যবিত্ত পরিবার সেটাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে এ সিনেমার গল্প।
৩. লুকিয়ে প্রেম করার গুজব রটে যায়। তাই জাভেদ খান সাহস পায়না স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী মায়ার মুখোমুখি হওয়ার। তবুও গাড়িতে করে তাকে ঘুরতে নিয়ে যায় দূরে। ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে, ‘একে অপরের অনেক দূরে গেলেই বরং খুব কাছাকাছি থাকা যায়।’ জাভেদ দাবি করে তাদের বিবাহিত জীবন খুব একঘেয়ে হয়ে গেছে। আগের মতো উচ্ছ্বাস আর নেই। এসব শুনে নিশ্চুপ হয়ে যায় মায়া আর ছেলেমেয়েরা কথা বলাই বন্ধ করে দেয় তাদের বাবার সাথে।
৪. নিতু (পার্ণ মিত্র) জাভেদ খানের গোপন ভালোবাসা। একে কীভাবে দূর করবে জীবন থেকে সে?- এ ব্যাপারেও কিঞ্চিত ভাবনা চিন্তা করে জাভেদ। এদিকে নিতু আর সাবেরি (নুসরাত ইমরোজ তিশা), জাভেদ খানের মেয়ে, যাকে বলে ছোট্টবেলার খেলার সাথী। মজার ব্যপার হলো এ দুজনের মাঝে স্কুল থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগিতা ছিল। না না, পরিচালক আর এক ফোঁটাও ঘাঁটাঘাঁটি করেননি ইলেক্ট্রা কমপ্লেক্স নিয়ে। তবে চিত্রনাট্য বলছে নিতুই জয়ী হয় শেষমেশ।
৫. নিন্দার আগুন উস্কে দিয়ে নিজের প্রথম সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ায় নিতু। আবার হুট করেই ‘সেড্যুস’ করে বসে জাভেদকে। এবং এ পর্যায়ে এসেই সহ্যশক্তির চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হয় জাভেদকে। একদিকে গোটা পরিবার অন্যদিকে তরুণী প্রেমিকা। এমন মাল্টিপল চয়েসের সামনে দাঁড়িয়ে এক চরম দ্বিধার মুখে বিহ্বল হয়ে পড়ে জাভেদ খান।
৬. সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র সাবেরি। প্রথমে রাগান্বিত পরে লজ্জিত এবং সবশেষে প্রতিশোধ পরায়ন এক কন্যার চরিত্র। বলতে গেলে গল্পের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। পিতার আচরণে ত্যক্ত হয়ে দায়ী করে নিজের মাকেই।
৭. শেষ দৃশ্যে হৃদয়ভার কমে আসে মা-মেয়ের। অতঃপর একটি প্রলম্বিত এপিলোগের মাধ্যমে সাবেরি মুখোমুখি হয় তার বাবা জাভেদ খানের।
এত বিতর্ক কেন এই সিনেমা নিয়ে এবার বোধহয় খানিকটা বোঝা যাচ্ছে।