২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় জিৎ-শুভশ্রী অভিনীত বস : বর্ন টু রুল। তামিল ছবির সেই রিমেক ব্যবসাসফলও হয়েছিল। একটা কানাঘুষা শোনা গিয়েছিল ছবিটি হিন্দিতেও বানানো হবে বলে। শেষ পর্যন্ত ছবিটির হিন্দি ভার্সন নয়, বানানো হয়েছে সিক্যুয়াল- বস টু : ব্যাক টু রুল। এবং সেটিও ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায়।
যৌথ প্রযোজনার জন্য অবশ্য সিনেমাটির মূল জুটি ভাঙা হয়নি। সিক্যুয়ালেও জুটি বেঁধেছেন জিৎ-শুভশ্রী। তবে যেহেতু যৌথ প্রযোজনা, তাই তাদের সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের নুসরাত ফারিয়াকে। আর অন্যতম খলচরিত্রে অভিনয় করেছেন অমিত হাসান। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আর সব চরিত্রই গেছে ওপারের ভাগে- ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, রজতাভ দত্ত, খরাজ মুখার্জি প্রমুখ।
চলচ্চিত্রটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে ভারত থেকে জিতস ফিল্মওয়ার্কস এবং বাংলাদেশ থেকে জাজ মাল্টিমিডিয়া। অবশ্য ভারতীয় প্রযোজকরা যে সব ট্রেইলার-সংবাদ ইত্যাদি প্রকাশ-প্রচার করেছে, তাতে বাংলাদেশের সহ-প্রযোজকদেরই কোনো স্বীকৃতি নেই। কাজেই বাংলাদেশের পরিচালকেরও যে নাম থাকবে না, তাতে আর আশ্চর্য কী!
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার এই চলচ্চিত্রটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছেন ভারতের বাবা যাদব এবং বাংলাদেশের আব্দুল আজিজ। এই দুজনকে বলা হচ্ছে যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশ অংশের পরিচালক। কিন্তু চলচ্চিত্রটির বাংলাদেশ অংশ যে কোনটা, সেও এক রহস্য। কারণ গোটা কাহিনিই তো মুম্বাইয়ের।
এমন নানা রহস্যের মধ্য দিয়ে অঘটন জন্ম দেয়ার সম্ভাবনা গড়ে উঠলেও, কেন যেন চলচ্চিত্রটার একটামাত্র বিষয়ে আপত্তি উঠল, সেটা একটা আইটেম সংকে ঘিরে। গত ঈদে জিৎ-ফারিয়ার বাদশা মুক্তি পেয়েছিল। তাতে রাখা হয়েছিল ঈদ নিয়ে একটি গান। এবার বস টু-তেও সে ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টায় রাখা হয়েছিল আল্লাহ মেহেরবান । যে গানে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন নুসরাত ফারিয়া ও জিৎ। প্রবল বিতর্কের মুখে শেষ পর্যন্ত গানটির কথাই পরিবর্তন করে ফেলা হয়।
চলচ্চিত্রটি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন জিৎ নিজেও। তার নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সিনেমা বলে কথা। শেষ পর্যন্ত কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শকদের তেমন সন্তুষ্ট করতে পারেনি। কারণ একঘেঁয়ে গল্প। গল্পে না ছিল প্রাণ, না ছিল চমকে দেয়ার মতো বাঁকবদল। এমন গল্প নিয়ে ফর্মুলাভিত্তিক ব্যবসায়িক চলচ্চিত্র যে ভালো ব্যবসা করতে পারবে না, সেটাই স্বাভাবিক।
অবশ্য ঝাঁ-চকচকে প্রিন্ট, অ্যাকশন-লোকেশন-কালার কারেকশন মিলিয়ে দেখতে একদম খারাপ হয়নি বস টু। অভিনয়ও নিতান্ত মন্দ হয়নি। কিন্তু ওই যে, সিনেমার যে মূল অনুষঙ্গ, যেটা দেখতে মানুষ হলে যায়, সেটাতেই যে প্রাণ নেই। তাই ৩৫ হাজার কোটি টাকার কাহিনিতেও মজেনি দর্শক। আর দর্শক না মজলে সিনেমা জমবে কীভাবে!