বছরের ৩ অদ্ভুতুড়ে বিজ্ঞাপন

এশিয়ার বোঁচা নাকের দেশগুলোর ক্রিয়েটিভিটি যে ভিন্ন লেভেলের তা স্বীকার করতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। কোরিয়ান সাসপেন্স বা ক্রাইম থ্রিলার মুভির স্বতন্ত্র ঘরানা সম্পর্কে ইদানিং অনেকেই জানি। থাই হররও একদম অন্য ট্র্যাকের। চাইনিজরা তো কতো রকমের মার্শাল আর্টের সাথে দুনিয়ার পরিচয় করালো তা আর বলার দরকার পড়ে না। ওদিকে জাপানি অ্যানিমে কিংবা উইয়ার্ড কমিক পাঞ্চ পুরো এশিয়ায় ওয়ার্ল্ড ফেমাস। আর প্রতিটা দেশের এই যে গুটিকয় (আসলে বলতে থাকলে শেষ হবে না) স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের কথা বললাম, এগুলো সম্পর্কে একটা কথাই চলে- সিম্পলি অদ্ভুতুড়ে। তো এই দেশগুলোর বিজ্ঞাপনও যে অদ্ভুতুড়ে লেভেলের ক্রিয়েটিভ হবে তাতেই বা সন্দেহ কী। ইমোশনাল বিজ্ঞাপন তৈরিতে থাইদের জুড়ি নেই। ওদিকে জাপানিদের বিজ্ঞাপনে একটা তকমা সবসময়ের জন্য লেগে গেছে। ওদের বিজ্ঞাপনকে বলা হয় লুডেক্রাস অ্যাডভার্টাইজিং। মানে কি না অ্যাবসার্ড, আউট অব দ্য ওয়ার্ল্ড রিডিকুলাস। কিন্তু শেষে গিয়ে অবশ্যই মজা পাবেন। আরো ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, পুরস্কার-টুরস্কারও জিতে নেয়। চলতি বছরের এমন অদ্ভুতুড়ে বিজ্ঞাপনেরই একটি শর্টলিস্ট এখানে।

গ্র্যাভিটি ক্যাট
এজেন্সি: হাকুহোডো ইনকরপোরেশন এবং তোহোকুশিনশা ফিল্ম করপোরেশন, টোকিও

এবারের কান লায়নসে সিলভার লায়ন জেতা ‘গ্র্যাভিটি ক্যাট’ নিঃসন্দেহে সেই বিজ্ঞাপনগুলোর একটি যেটা একবার দেখে পোষাবে না, বারবার দেখতে হবে, বন্ধুদের দেখাতে হবে, এটা নিয়ে যতোইচ্ছে আলাপ করতে হবে আর তারপর দু’কলম লিখে ফেলতে পারলে পরে এক্সাইটমেন্ট একটু কমতে পারে (এই যে কমলো, ফাইনালি)। প্লেস্টেশন জাপানের ‘গ্র্যাভিটি রাশ টু’ গেমের জন্য বানানো অদ্ভুত আইডিয়ার ওয়ান্ডারফুলি এক্সেকিউটেড এই বিজ্ঞাপনটি দেখার পর এর বিহাইন্ড দ্য সিন দেখাটা একরকম ফরজ। তবেই বোঝা যাবে অদ্ভুত আইডিয়াকে ঠিকমতো জীবন দান করার জন্য কতোটা ডেডিকেশন আর শ্রম দরকার পড়তে পারে। চার মিনিট লম্বা বিজ্ঞাপনটি দুই বোন আর তাদের বিড়ালের একটি দিনের গল্প। বিড়ালটি হঠাৎ করে গ্র্যাভিটির নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখাতে শুরু করে। তারপর দুই বোন কীভাবে তাকে সামলালো আর সেখান থেকে কীভাবে নিউটন’স ল’ অব গ্র্যাভিটি এলো তা জানার জন্য ভিডিও দেখতে হবে।

স্টিক টুগেদার, নো ম্যাটার হোয়াট
এজেন্সি: আসাতসু ডিকে, টোকিও

গ্র্যাভিটি ক্যাট আর এই বিজ্ঞাপনের মধ্যে কোনটা বেশি উইয়ার্ড তা নিয়ে জোর লড়াই হবে। এটিও এবারের কান-এ সিলভার জিতেছে। জাপানি কোম্পানি সুরিয়া’র জন্য তৈরি করা হয়েছে এই বিজ্ঞাপনটি। তবে ‘সুরিয়া’ কিসের কোম্পানি এটি বলে দিলেও স্পয়লার হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। তাই চুপচাপ বিজ্ঞাপনটি দেখে নিন।

ক্যাপচার
এজেন্সি: ম্যাকান ব্যাংকক

এবারে থাই মাসালাযুক্ত অনলাইন ভিডিও। যা কান-এ গোল্ড লায়ন জিতে নিয়েছে মেসেজ ডেলিভারি দেয়ার অদ্ভুতুড়ে স্টাইলের জন্য। মুশকিল হচ্ছে, ম্যাকান ব্যাংককের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই ভিডিওটির অ্যাডভারটাইজারের নাম কিংবা গল্পের সামান্য ইংগিত দিলেও এর অ্যাডটির অর্ধেক মজা স্পয়েল হয়ে যেতে পারে। শুধু বলে দেই বিজ্ঞাপনটিতে থাইল্যান্ড পুলিশের নিত্যনৈমিত্তিক একটি আচরণকে বেশ মজা করে ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও সে আচরণ এমনিতেই বেশ হাস্যকর। থাই পুলিশরা নাকি মহাসড়কে হঠাৎ করে অনেকটা মাটি ফুঁড়ে হাজির হয়। আর পথের গাড়িচালকদের থামিয়ে উল্টোপাল্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। বাকিটা বলছি না। দেখতে শুরু করুন।