সময়ের স্রোতে বাংলা নামের দেশেও বদলেছে লেখনীর ধারা। বাংলার লিপিতেও তো কম পালাবদল হয়নি! সেই আদিকাল থেকেই লিপির অলংকরণ বাঙালির আত্মিক সত্ত্বার অংশ। বাংলার সেই প্রাচীন শিল্পটি কেমন চেহারায় আছে আজ? কেমন করে ধারণ করেছে আমাদের দেশের মানুষেরা? আপনার ছেলেবেলায় সুন্দর হাতের লেখার অদক্ষতার বকুনি আজও চলছে কিনা জানি না। যদিও সেই হাতের লেখা নিয়েই, মানে ক্যালিগ্রাফি নিয়েই হচ্ছে কথকতা।
ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ দেশের মানুষের কাছাকাছি পৌঁছতে চেয়েছে ক্যালিগ্রাফির হাত ধরে। ক্রমে হারিয়ে যেতে বসা এই শিল্প নিয়ে সমকালীন মানুষের চিন্তার বাস্তবধর্মী চিত্র ফুটে উঠেছে সারা দেশ থেকে তাদের সংগৃহীত ক্যালিগ্রাফিগুলোতে। আর সেগুলো নিয়েই এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে ধানমন্ডির EMK সেন্টারে।
ক্যালিগ্রাফি মূলত বর্ণের মাঝে নকশার খেলা। বর্ণগুলো এখানে প্রাণ পায় শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায়। এসব মিলিয়েই উপস্থাপনাটিই হয় একদম অন্যরকম। ভুলেই যাবেন এরই মাঝে লুকিয়ে আছে আবেগী কোন লাইন, কোন কথা অথবা এমনকী একগুচ্ছ অনুভূতি। কারণ আপনার সামনে পুরোটা বিষয় হাজির হবে অনন্য এক চেহারায়, শিল্পের আবেদনে।
দূরের ইউরোপ অথবাস মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গড়ে ওঠা এই শিল্পের নিজস্ব চেহারা আছে দেশে দেশে। এই তো আমাদের দেশেই বদলেছে শাসক, সাথে বদলেছে পুঁথির চেহারা। লেখক বা সাহিত্যিক সময়কে ধরে রেখেছেন যেমন লিপি দিয়ে, তেমনি নিজের স্বকীয়তায় তৈরি করেছেন ক্যালিগ্রাফি। পরিচয় হিসেবে চিহ্ন রেখেছেন নিজের। ক্যালিগ্রাফির একান্ত আপনার ছন্দে।
ইএমকে সেন্টারের প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ৪০টির বেশি ক্যালিগ্রাফিক শিল্প। প্রায় সবগুলোই বাংলা, ইংরেজি অথবা আরবি অক্ষরগুলো নিয়ে সাজানো। তৃতীয়বারের মত আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে আজ বিকেলে যদি একটু ফুসরত মেলে তবে ঘুরে আসুন। কারণ আজই প্রদর্শনীর শেষদিন। দারুণ সব কাজ চমকে দেবে আপনাকে। বর্ষা অথবা জ্যামের শহরে দেবে একটুখানি স্থিতি।