বাংলা সিনেমার এক ডজন আইটেম সং

উপমহাদেশের চলচ্চিত্র মানেই গান। নাচ-গান ছাড়া এ অঞ্চলের চলচ্চিত্রের কথা ভাবাই যায় না। গানের জনপ্রিয়তাও এখানকার চলচ্চিত্রের ব্যবসায়িক সাফল্যের অন্যতম পূর্বশর্ত। আর চলচ্চিত্রের গানের মধ্যে আইটেম গান তো আরো স্পেশাল। চটকদার কথা আর চোখ ধাঁধানো কোরিওগ্রাফির মাধ্যমে এই গানগুলো বানানোই হয় দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে। সে জন্য প্রায়ই এই গানগুলোর সাথে চলচ্চিত্রের মূল কাহিনির তেমন যোগও থাকে না। যোগ থাকুক আর না থাকুক, চটকদার ঝকমকে উপস্থাপনের মাধ্যমে দর্শকদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়াই এই গানগুলোর মূল উদ্দেশ্য।

উপমহাদেশের চলচ্চিত্রে আইটেম গানের ইতিহাস অনেক পুরনো। শুরুর ইতিহাসটা ঠিক পরিস্কার নয়। সম্ভবত বলিউডের চলচ্চিত্র থেকেই এই ধরনের গানের আরম্ভ। শুরুটা হয়েছিল সম্ভবত কুকু মোরে-র হাত ধরে, চল্লিশের দশকে। এরপর পঞ্চাশের দশকে বৈজয়ন্তীমালা, হেলেন আইটেম গানে নাচার জন্য খ্যাতি লাভ করেন। তখন থেকেই উপমহাদেশের চলচ্চিত্রে আইটেম গান এক প্রতিষ্ঠিত চর্চা।

বলিউডের প্রভাবে উপমহাদেশের অন্যান্য ইন্ড্রাস্ট্রির মতো ঢাকার চলচ্চিত্রেও আইটেম গানের চর্চা শুরু হয়। ষাটের দশকে ঢাকায় রাজত্ব করে মূলত লোককাহিনি নির্ভর চলচ্চিত্র। কাজেই সে সময় আইটেম গানের তেমন সুযোগ ছিল না। তবে সত্তরের দশক থেকে ঢাকার চলচ্চিত্রেও আইটেম গান জায়গা করে নিতে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই বেশ কিছু আইটেম গান তুমুল জনপ্রিয়তাও পায়।

পাঠকদের জন্য ষাটের দশক থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত সময়ের তুমুল জনপ্রিয় এক ডজন আইটেম গান একত্রিত করা হলো।

আমি রূপনগরের রাজকন্যা রূপের জাদু এনেছি

চলচ্চিত্র- হারানো দিন (১৯৬১)

পরিচালক- মুস্তাফিজ

অভিনয়- শবনম, রহমান, রেখা, সুভাষ দত্ত, ইনাম আহমেদ

শিল্পী- ফেরদৌসী বেগম

গীতিকার- আজিজুর রহমান

হৈ হৈ হৈ রঙ্গিলা

চলচ্চিত্র- রংবাজ (১৯৭৩)

পরিচালক- জহিরুল হক

অভিনয়- রাজ্জাক, কবরী, আলতাফ মাহমুদ, সুলতানা জামান

শিল্পী- সাবিনা ইয়াসমিন, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী

গীতিকার- গাজী মাজহারুল আনোয়ার

ও দরিয়ার পানি তোর মতলব জানি

চলচ্চিত্র- তুফান (১৯৭৫)

পরিচালক- অশোক ঘোষ

অভিনয়- ওয়াসিম, শাবানা, মাহমুদ কলি, সুচরিতা, টেলিসামাদ, জসিম

শিল্পী- রুনা লায়লা

চুপি চুপি বলো কেউ জেনে যাবে

চলচ্চিত্র- নিশান (১৯৭৭)

পরিচালক- ইবনে মিজান

অভিনয়- জাভেদ, ববিতা, সুচরিতা, ইনাম আহমেদ

শিল্পী- খুরশীদ আলম ও রুনা লায়লা

গীতিকার- দেওয়ান নজরুল

চুমকি চলেছে একা পথে

চলচ্চিত্র- দোস্ত দুশমন (১৯৭৭)

পরিচালক- দেওয়ান নজরুল

অভিনয়- ওয়াসিম, সোহেল রানা, শাবানা, সুচরিতা, আজিম, জসিম

শিল্পী- খুরশীদ আলম

গীতিকার- দেওয়ান নজরুল

নাচ আমার ময়না তুই পয়সা পাবি রে

চলচ্চিত্র- এক মুঠো ভাত (১৯৭৮)

পরিচালক ইবনে মিজান

অভিনয়- জাফর ইকবাল, ববিতা, জসিম

শিল্পী- খুরশীদ আলম

গীতিকার- দেওয়ান নজরুল

চুরি করেছো আমার মনটা

চলচ্চিত্র- মিস লঙ্কা (১৯৮৫)

পরিচালক- জিয়াউদ্দিন আসলাম

অভিনয়- ববিতা, ফয়সাল, জাফর ইকবাল, আনুজা

শিল্পী- খুরশীদ আলম

গীতিকার- আহমেদ জামান চৌধুরী

তেল গেলে ফুরাইয়া বাত্তি যায় নিভিয়া

চলচ্চিত্র- ত্যাগ (১৯৯২)

পরিচালক- শিবলী সাদিক

অভিনয়- চম্পা, অরুনা বিশ্বাস, মিঠুন, মিজু আহমেদ, হুমায়ুন ফরীদি, এটিএম শামসুজ্জামান

শিল্পী- সৈয়দ আব্দুল হাদী

গীতিকার- মনিরুজ্জামান মনির

কে বলে আমি ভালো না

চলচ্চিত্র- সৎ মানুষ

পরিচালক- ওয়াকিল আহমেদ

অভিনয়- দিতি, হুমায়ুন ফরীদি

শিল্পী- সৈয়দ আব্দুল হাদী

গীতিকার- মনিরুজ্জামান মনির

বাবা বলে ছেলে নাম করবে

চলচ্চিত্র- কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৩)

পরিচালক- সোহানুর রহমান সোহান

অভিনয়- সালমান শাহ, মৌসুমী, রাজীব, আহমেদ শরীফ, আবুল হায়াত

শিল্পী- আগুন

গীতিকার- মনিরুজ্জামান মনির

এই তো প্রথম একটি মেয়ে আমার প্রেমে পরেছে

চলচ্চিত্র- বিশ্বপ্রেমিক (১৯৯৫)

পরিচালক- শহীদুল ইসলাম খোকন

অভিনয়- মৌসুমী, রুবেল, হুমায়ুন ফরীদি, গোমাল মোস্তফা, মায়া হাজারিকা

শিল্পী- সৈয়দ আব্দুল হাদী, রুনা লায়লা

গীতিকার- সুবর্না মুস্তাফা

জাদু রে সোনা রে ও খুকুমনি রে আমাকে ভালোবাসো রে

চলচ্চিত্র- পালাবি কোথায় (১৯৯৭)

পরিচালক- শহীদুল ইসলাম খোকন

অভিনয়- হুমায়ুন ফরীদি, শাবানা, সুবর্না মুস্তাফা, চম্পা

শিল্পী- সৈয়দ আব্দুল হাদী, রুনা লায়লা

গীতিকার- মিল্টন খন্দকার