গত ২১ মে রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে এক বিশেষ প্রদর্শনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সপরিবারে উপভোগ করেছেন অমিতাভ রেজা চৌধুরীর আয়নাবাজি। দেখার পর রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবার চলচ্চিত্রটির ভূয়সী প্রশংসাও করেন। পরিচালক জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের অনুরোধেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
কিন্তু কেন রাষ্ট্রপতি হঠাৎ সপরিবারে এই ছবিটি দেখার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করলেন? আকাশ-সংস্কৃতির যুগে কেন তাকে এত আয়োজন করে একটি বাংলা চলচ্চিত্র দেখতে হলো? আর কেন-ই বা চলচ্চিত্রটি দেখে তিনি এর ভূয়সী প্রশংসা করলেন? এগুলোর উত্তর জানা না গেলেও, কিছু কারণ অনুমান করে নেয়া-ই যায়।
প্রথম কারণ অবশ্যই আয়নাবাজি-র প্রতি দর্শকের ভালোবাসা, মানে বক্স অফিস সাফল্য। চলচ্চিত্রটি যেভাবে দর্শক টেনেছে, মনপুরা-র পরে আর কোনো বাংলা চলচ্চিত্র এমন ব্যাপকভাবে দর্শক টানতে পারেনি। দর্শকদের, মানে মানুষের এই ভালোবাসা যে নিশ্চিতভাবেই প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ ও বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে এই চলচ্চিত্রটির প্রতি আগ্রহী করে তুলবে, তাতে আর আশ্চর্যর কী আছে!
আয়নাবাজি-র এই দর্শক আনুকূল্যের অন্যতম কারণ গল্পের নতুনত্ব। বাংলা চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ- একই ফর্মুলার একই ধরনের কাহিনির চর্বিতচর্বন। সে দিক দিয়ে আয়নাবাজি-র গল্পটা বাংলা সিনেমার দর্শকদের জন্য একেবারেই আনকোরা এক নতুন স্বাদের সন্ধান দিয়েছে। গল্পের এই নতুনত্ব পছন্দ হওয়ার কথা আমাদের রাষ্ট্রপতিরও।
রস-রসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বিশেষভাবে বিখ্যাত। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে দেশবাসী সম্ভবত তার সরস মন্তব্যগুলোই সবচেয়ে বেশি মিস করে। সে অভাব তিনি খানিকটা করে পুষিয়ে দেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আচার্যর বক্ততায়। আয়নাবাজি চলচ্চিত্রটিতেও এই ধরনের সরস সংলাপ তো রয়েছেই, কাহিনিতেও রয়েছে এমন অসংখ্য সরস উপাদান। সেগুলো রসিক রাষ্ট্রপতির পছন্দ হওয়াটাও খুবই স্বাভাবিক।
তবে এই চলচ্চিত্রটির ভূয়সী প্রশংসা পাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারন নিহিত অসৎ রাজনৈতিক নেতার চরিত্রটির চূড়ান্ত পতনের চিত্রায়নে। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ নিজে সারা জীবন একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে জনগণের সেবা করেছেন। তাই এই সিনেমার মধ্য দিয়ে অসৎ রাজনীতিকদের মুখোশ খুলে দেয়ার বিষয়টা তাঁকে উজ্জীবিত করারই কথা।