সম্প্রতি জানা গিয়েছিল, ছবিয়ালের ভাই-বেরাদারেরা একাট্টা হয়েছেন। তারা আবার একসাথে নাটক-টেলিফিল্ম, টিভি-প্রোডাকশন বানাতে চান। এবারে অবশ্য তারা কেবল নাটকই বানাচ্ছেন না, বানাতে যাচ্ছেন সিনেমাও। আর জড়ো হওয়া ভাই-ব্রাদারের সংখ্যাও গেলবারের মতো দশ নয়, তের।
জড়ো হওয়া এই তের ভাই-ব্রাদারের মধ্যে বার জনই ঈদে নাটক বানাবেন। সে উদ্দেশ্যে ছবিয়ালের সঙ্গে একত্রিত হয়েছে গ্রুপএম ইএসপি ও ধ্বনিচিত্র। একটি চুক্তিও হয়েছে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির সাথে। সেই চুক্তি অবশ্য কেবল এই বারটি নাটকেই সীমাবদ্ধ নয়। দীর্ঘমেয়াদী এই চুক্তি অনুযায়ী নাটকগুলোর পরে তারা সিনেমা তো বানাবেনই, সেই সাথে নিয়মিত বানাবেন অনলাইনের জন্য ভিডিও কন্টেন্ট।
আর তাদের এই কর্মযজ্ঞের তত্ত্বাবধান করবেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এই প্রযোজনাগুলোর অন্যতম নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে থাকছেন তিনি। তার তত্ত্বাবধানে নাটক বানাবেন ছবিয়ালের অন্যান্যরা- রেদওয়ান রনি, আশুতোষ সুজন, শরাফ আহমেদ জীবন, আশফাক নিপুণ, গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, ইফতেখার আহমেদ ফাহমী, মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ, হুমায়ূন সাধু, ইশতিয়াক রোমেল, মাহমুদুল ইসলাম, আলি ফিদা একরাম তোজো ও আদনান আল রাজীব।
এই বার ভাই-বেরাদারের মধ্যে সাত জন নাটক বানাবেন রোজার ঈদে। বাকি পাঁচজন কোরবানির ঈদে। রোজার ঈদের সাতটা নাটকের জন্য ছয়টা গল্পও ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়ে গেছে- ছাব্বিশ দিন মাত্র, বিকেল বেলার পাখি, আবার তোরা সাহেব হ, ছেলেটা কিন্তু ভালো ছিল, মি. জনি (একটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর এবং কয়েকজন ইয়ুথ সেলিব্রেটি) ও নোঙ্গর ফেলি ঘাটে ঘাটে। যদিও কোন নাটকেরই অভিনয় শিল্পী চূড়ান্ত হয়নি এখনো।
ছবিয়ালের রিইউনিয়নকে উপলক্ষ্য করে নির্মিত বলে, সবগুলো গল্পই শেষ হয়েছে কোনো না কোনো ধরনের পুনর্মিলনীর মধ্য দিয়ে। তবে কে কোন গল্পের নাটক পরিচালনা করবেন, তা এখনো ঠিক করা হয়নি। তবে এই নাটকগুলোর মধ্য দিয়ে ছবিয়ালের সবাই তাদের নিজস্ব ঘরানা থেকে বেরিয়ে আসবেন বলে আভাস দিচ্ছেন নির্মাতারা।
ছবিয়ালের সবাই কেবল যে যার পরিচিত ঘরানা থেকেই বেরিয়ে আসছেন না, তারা তাদের সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত বৈশিষ্ট্য ছেড়েও বেরিয়ে আসতে যাচ্ছেন। চিত্রনাট্যের চেয়ে ইম্প্রোভাইজেশনের প্রতি বেশি মনোযোগ দেয়ার জন্য বিখ্যাত ছবিয়াল গোষ্ঠী এবার সম্পূর্ণ চিত্রনাট্য প্রস্তুত করে কাজে নামার পরিকল্পনা করেছেন। কারণ, নাটকের পরেই যে তারা সিনেমা বানানোর কাজে হাত দেবেন। অবশ্য নাটকগুলো কোন চ্যানেলে প্রচারিত হবে, তা এখনো ঠিক করা হয়নি।
২০০০ সালে বাংলাদেশের টিভি নাটকের জগতে প্রবেশ করেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি এবং তার সহযোগীরা বাংলাদেশের নাটকে এক নতুন ধারার সূচনা করেন। তাদের নাটকে শহুরে মধ্যবিত্ত চরিত্রগুলো মার্জিত ভাষার বদলে চলতি শহুরে ভাষায় কথা বলতে শুরু করে। পায় নাগরিক তরুণ প্রজন্মের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তাও। সব মিলিয়ে তাদের প্রচলন করা এই কেতাটা টিভি নাটকের জগতে একরকমের প্রতিষ্ঠাই পেয়ে যায়।
পরে ফারুকী তার সাথে সহযোগী হিসেবে কাজ করা নির্মাতাদের নিয়ে গড়ে তোলেন ছবিয়াল। ২০০৫ সালে তাদের করা কাজ নিয়ে টিভি চ্যানেলে আয়োজিত হয় ছবিয়াল উৎসবের। তাতে ছবিয়ালের নির্মাতারা স্ব স্ব নির্মাণ নিয়ে হাজির হন টিভি পর্দায়। এরপর থেকে তারা নিয়মিতই টিভি নাটক ও টেলিফিল্ম নির্মাণ করতে শুরু করেন। তবে সম্প্রতি ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরায়, তাদের প্রায় কারোরই আর একসাথে কাজ করা হয়ে উঠছিল না।