একঝলকে জয়ার তিন জাতীয় পুরস্কার

২০১৫ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষিত হয়েছে সম্প্রতি। মাঝে দুই বছর বিরতি দিয়ে আবারও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নিয়েছেন জয়া আহসান। এবার তার শ্রেষ্ঠত্ব অনিমেষ আইচ পরিচালিত জিরো ডিগ্রি (২০১৫) চলচ্চিত্রের সানিয়া চরিত্রটিতে অভিনয়ের সুবাদে।

২০১৫ পর্যন্ত চলচ্চিত্রের মাত্র ৬ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় করেছেন ৯টি চলচ্চিত্রে। এর মধ্যে ৬টি বাংলাদেশি ও ৩টি ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র। মাত্র ৬টি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ৩টির জন্যই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

জিরো ডিগ্রি-র আগে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর গেরিলা (২০১১) ও রেদওয়ান রনির চোরাবালি-র (২০১২) জন্য, পরপর দুই বছরে।

গেরিলা নির্মিত হয় মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস নিষিদ্ধ লোবান অবলম্বনে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সাংবাদিক স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পরেও, বিলকিস নামের এক চাকুরীজীবী বাঙালি নারীর বলিষ্ঠ ভূমিকা এবং গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে জড়িয়ে তার নিজেরও গেরিলা হয়ে ওঠার কাহিনি নিয়ে নির্মিত হয়েছিল চলচ্চিত্রটি। নারী গেরিলার চরিত্রে অভিনয় করেই জয়া প্রথম বারের মতো শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেন।

গেরিলা (২০১১) চলচ্চিত্রের বিলকিস চরিত্রের জন্য নিজের প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান জয়া

২০১২ সালে রেদওয়ান রনি নির্মাণ করেন ক্রাইম-থ্রিলার চোরাবালি। চলচ্চিত্রটিতে জয়া অভিনয় করেন সাংবাদিক নবনী আফরোজের চরিত্রে। এমনই নির্ভীক যে, ক্ষমতাবান নেতা গনিকে নিয়েও খবর প্রকাশ করতে ভয় পায় না সে। আর এই চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো জিতে নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

চোরাবালি-র (২০১১) সাংবাদিক নবনী চরিত্রের জন্য পান দ্বিতীয় বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

এরপর তৃতীয়বার জিতলেন জিরো ডিগ্রিতে, সোনিয়া চরিত্রে অভিনয় করে। এই চরিত্রটি আগের দুই চরিত্রের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। প্রথম দুটি চরিত্রও এক রকম নয়, তবে তাদের মধ্যে অন্তত একটি মিল আছে- প্রথম চরিত্রটি দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে, দ্বিতীয় চরিত্র জীবন বিপন্ন করে সত্যের অনুসন্ধানে। কিন্তু সোনিয়া তেমন নয়, সে বরং প্রতিশোধপরায়ণ। তার সাথে হওয়া অবিচারের প্রতিশোধ নেয়াকে সে তার জীবনের লক্ষ্য হিসেবে স্থির করে।

জয়া তৃতীয় বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন জিরো ডিগ্রি-র (২০১৫) সোনিয়া চরিত্রে অভিনয়ের জন্য

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার না পাওয়া জয়ার অন্য চলচ্চিত্র তিনটি হলো- নুরুল আলম আতিকের ডুবসাঁতার (২০১০), তানিম নূরের ফিরে এসো বেহুলা (২০১১) এবং সাফি উদ্দিন সাফির পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী (২০১৩)। এই তিনটির মধ্যে ফিরে এসো বেহুলা যে বছর মুক্তি পায়, সে বছর জয়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান গেরিলা-র জন্য। অন্যদিকে ২০১৪ সালে জয়া অভিনীত কোনো চলচ্চিত্রই মুক্তি পায়নি। অবশ্য এর বহু আগে ২০০৪ সালে ব্যাচেলর চলচ্চিত্রে একটি ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

জয়া প্রথম কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন নুরুল আলম আতিকের ডুবসাঁতার (২০১০) চলচ্চিত্রে