স্রেফ পহেলা বৈশাখের সকালে শহুরে ডাইনিংয়ে উটকো আগন্তুক পান্তা ভাত হাজির হলেও মূলত পান্তা, ভাত সংরক্ষণেরই লোকজ এক পদ্ধতি। রাতের উদ্বৃত্ত ভাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পান্তা ভাত খাওয়ার চল বাংলার কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সভ্যতার হাজার বছরের।
ভাত মূলত পুরোটাই শর্করা। তাই ভাতে পানি দিয়ে রাখলে বিভিন্ন গাঁজনকারী ব্যাক্টেরিয়া বা ইস্ট এই শর্করার সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে ইথানল ও ল্যাকটিক এসিড তৈরি করে। এই ল্যাকটিক এসিডের কারণে কমে pH, বাড়ে পান্তা ভাতের অম্লত্ব।
২০১৬ সালে Assam Agricultural University-র এক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে,
পুষ্টি/আয়নমান | সাধারণ ভাত(প্রতি ১০০ গ্রামে) | পান্তা ভাত (প্রতি ১০০ গ্রামে ১২ ঘণ্টা পানিতে রাখার পর) |
আয়রন | ৩.৪ মি.গ্রা. | ৭৩.৯১মি.গ্রা. |
পটাশিয়াম | ৩৫ মি.গ্রা. | ৮৩৯ মি.গ্রা. |
ক্যালসিয়াম | ২১ মি.গ্রা. | ৮৫০ মি.গ্রা. |
সোডিয়াম | ৪৭৫ মি.গ্রা. | ৩০৩ মি.গ্রা. |
ফারমেন্টেশনের কারণে পান্তা ভাত পাকস্থলীতে উপস্থিত প্যানক্রিয়াটিক অ্যামাইলেজসহ আরও কিছু এনজাইমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও অলিগোসাকারাইডসহ জটিল শর্করা সহজে হজমে সহায়তা করে।
পান্তার উপকারিতা
* মানবদেহের জন্য উপকারী বহু ব্যাকটেরিয়া পান্তার মধ্যে বেড়ে ওঠে।
* পেটের পীড়া ভালো হয় এবং শরীরে তাপের ভারসাম্য বজায় থাকে।
* রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে কারণ পান্তা ভাতে গরম ভাতের তুলনায় সোডিয়ামের পরিমাণ কম।
* অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সবল হয় এবং মেজাজ ভালো থাকে।
*পান্তা ভাত, ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন বি-১২-এর ভালো উৎস।
*শর্করাসমৃদ্ধ জলীয় খাবার বলে এটি গরমের দিনে শরীরকে ঠান্ডা ও সতেজ রাখে।
* কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
* অ্যালার্জিজনিত সমস্যা কমে এবং ত্বক ভালো থাকে।
* সব রকম আলসার দূরীভূত হয়।
* শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।